প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: নতুন বছর ঘুরতেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই নির্বাচন শুরুর অনেক আগে থেকেই এবার রাজনৈতিক দলগুলি ময়দানে নেমে পড়েছে নিজের দলের পরিকাঠামো সংশোধনের উদ্দেশে। ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক কাঠামো সংশোধনের জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকারও। এদিকে শাসকদলের একটি অংশ মনে করছে, সরকারি কাজে আমলাদের শ্লথ গতির জন্য ‘ফলো আপ’ প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে হচ্ছে না। ফলে মানুষ সময়ের পরিষেবা ঠিক সময়ে পাচ্ছেন না। ফলস্বরূপ রাজনৈতিক ভাবে যার ‘নেতিবাচক প্রভাব’ গিয়ে পড়ছে শাসকদলের উপরেই। তাই এবার সেই ব্যাপারে নড়ে চড়ে বসল নবান্ন।
আধিকারিকদের রিপোর্ট জমা দিতে যেতে হবে নির্দিষ্ট জায়গায়
রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে আধিকারিকদের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে মোবাইল অ্যাপ তৈরির বিজ্ঞপ্তি আগেই জারি করেছিল নবান্ন। সেই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, যদি কোনও অফিসার সরকারি কাজ পরিদর্শনের কাজে যায় তাহলে তাঁকে অবশ্যই GPS চালু করে রাখতে হবে। কারণ এই GPS এর মাধ্যমেই নবান্নে বসে অফিসারদের সঠিক অবস্থান জানা যাবে। অন্যদিকে ঘরে বসে আধিকারিকদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার দিন শেষ হতে চলেছে। সরকারি কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসারকে পৌঁছে যেতে হবে নির্দিষ্ট জায়গায়। সেখান থেকেই তাঁকে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য অ্যাপে আপলোড করতে হবে।
আসলে নবান্নের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য ব্লক, মহকুমা এমনকি, জেলার প্রশাসনিক স্তরেও এমন কিছু আধিকারিক রয়েছেন, যাঁরা কাজের অগ্রগতির বিষয়ে একদমই ওয়াকিবহাল থাকেন না। ফলে সরকারও জানতে পারে না, যেখানে যে কাজ শুরু হয়েছে, তা কতটা এগোল। এভাবেই ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটের আগে সরকারকে গতিশীল রাখতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই সরকারি কাজে দেরি যাতে না হয় তার জন্যই এই উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে এই অ্যাপের সমস্ত কাজ তদারকি করতে ৮ সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে।
৮ সদস্যের কাজ কী হবে?
সম্প্রতি অর্থ দফতরের তরফ থেকে এই ৮ সদস্যের টিমের বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে। আসলে কাজের দ্রুততা আনার জন্য, একই কাজ দু’বার করতে গিয়ে অর্থ নষ্ট যাতে না হয় এবং সরকারি কাজে সময় যাতে নষ্ট না হয় তার জন্যই এই পদক্ষেপ করল নবান্ন। জানা গিয়েছে, এই ৮ সদস্যের টিমের কাজ হবে অ্যাপ মারফত আসা তথ্যগুলি যাচাই করা, যাচাইয়ের পর কী পদক্ষেপ করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কিনা সেটা তদারকি করা। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভ্যান্স সেলে নানা অভিযোগ জমা পড়েছে। সেইসব খতিয়ে দেখে দ্রুত সেসবের সমাধান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।