প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এইমুহুর্তে রাজ্যে চলছে শিক্ষকদের আন্দোলন। নিজেদের হকের চাকরি ফিরে পেতে আমরণ অনশনে বসেছেন আন্দোলনকারীরা। আর এই আবহে প্রাথমিকে 32 হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল (Primary School Job Cancellation Case) মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলল রাজ্য। এমনকি তাঁর বিচার পদ্ধতি এবং রায়দান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত।
অভিযোগের তীর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দিকে
জানা গিয়েছে, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার 2016 সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় 32 হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানিতে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকারের আইনজীবী জানান, ‘‘তখনকার সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সঠিক বিচার পদ্ধতি মেনে বিচার করেননি।
এমনকি শুনানি পদ্ধতি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন রয়েছে। সেই সময় সিঙ্গল বেঞ্চ সকলকে বলার সুযোগ দেয়নি। বিচারপতি খেয়ালখুশি মতো শুনানি পর্ব চালিয়ে গিয়েছেন।’’ যার প্রতিক্রিয়ায় এবার পাল্টা একাধিক প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট।
সূত্রের খবর, গতকাল রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত অভিযোগ তোলেন যে, “ কোনো দূর্নীতি সংক্রান্ত ঘটনা প্রমাণ না হওয়ার পরেও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশে দুর্নীতি শব্দটা ব্যবহার করেছেন। এমনকি সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে নিয়োগের সমস্ত খুঁটিনাটিতে কার্যত হস্তক্ষেপ করেছেন।” শুধু তাই নয়, তিনি এও অভিযোগ তোলেন যে, যাঁরা ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন তাঁদের আদালতে নাকি ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
মেধাতালিকা প্রকাশ করা নিয়ে সংশয় পর্ষদের
এদিকে প্রাথমিকের 32 হাজার চাকরি বাতিলের নেপথ্যে ‘অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট’ না নেওয়ার কারণ দেখিয়েছিল সিঙ্গল বেঞ্চ। কিন্তু এইমুহুর্তে পর্ষদ জানায়, এই অভিযোগের নাকি কোনও গুরুত্ব নেই। জেলাভিত্তিক মেধাতালিকা প্রকাশ হয়। ওই টেস্টও সেই অনুযায়ী নেওয়া হয়েছিল। আর তাতেই পাল্টা বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘এখন বলছেন মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল।
কিন্তু এর আগে আপনারাই জানিয়েছেন প্রকাশ করা হয়নি। আপনাদের কোন অবস্থান সঠিক?’’ এ ছাড়া এই মামলার শুনানিতে পর্ষদের উদ্দেশে ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে যে প্রাথমিক নিয়োগে কোনও এজেন্সিকে নিযুক্ত করা হয়েছিল কি না ৷
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভান্ডারের পর সরাসরি অন্য ভাতা! খরচ কত, কজন পান? হিসেব পেশ রাজ্য সরকারের
পর্ষদের বিরুদ্ধে কী কী প্রশ্ন ডিভিশন বেঞ্চের?
পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ছাড়া সিলেকশন কমিটির ভূমিকা কী ছিল তাও এদিন পর্ষদের কাছে জানতে চান ডিভিশন বেঞ্চ। এমনকি এও জিজ্ঞাসা করা হয় যে, পর্ষদের প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছিল কি না? উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট মূল্যায়নে বাইরের সংস্থাকে কেন বেছে নেওয়া হয়েছিল?
এছাড়াও কী ভাবে মূল্যায়নের বরাত পেল ওই সংস্থা? কেন প্রথমে বরাতের বিষয়ে অন্য কেউ জানল না? কোন আইনের ভিত্তিতে তাদের বরাত দেওয়া হল? জানা গিয়েছে আগামী 23 জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। সেদিনই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আদালতে প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর দেবে।
বড় জয় NIOS এবং DElEd প্রার্থীদের
অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে কলকাতা হাইকোর্টে বড় স্বস্তি পেল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং বা NIOS থেকে DElEd পাশ করা বহু চাকরিপ্রার্থীরা। আজ হাইকোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য স্পষ্ট জানিয়ে দেন, NIOS থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ নিয়োগ ক্ষেত্রে শুধু মামলাকারী বলে কাউকে আলাদা করে দেখা যাবে না, প্রত্যেকেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার পাবেন।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন88 আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |