কেন্দ্র শূন্য, রাজ্য সরকার দিয়েছে মাত্র ২৫%! বন্ধ হয়ে যাবে প্রাথমিক স্কুলগুলো? চিন্তায় শিক্ষকরা

Published on:

wb school

শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ বছর শেষ হওয়ার আগেই কপাল পুড়ল রাজ্যের বহু প্রাথমিক স্কুলগুলির। তবে অন্যদিকে কিছুটা হলেও কপাল খুললো মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলির। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন যে কী হয়েছে? আসলে আজ আলোচনা হবে স্কুলগুলিকে রাজ্যের তরফে দেওয়া কম্পোজিট গ্র্যান্টের মানি নিয়ে। আসলে এই টাকা কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগ উদ্যোগে স্কুল গুলিকে দেওয়া হয়। তবে অভিযোগ, এক টাকাও দেয়নি কেন্দ্র সরকার। ওদিকে রাজ্য সরকারের তরফে মাত্র ২৫ শতাংশ টাকা পাঠিয়েছে। এমত অবস্থায় সকলের একটাই প্রশ্ন মাত্র ঐটুকু টাকায় কিইই বা হবে?

গাইডলাইন জারি রাজ্যের

WhatsApp Community Join Now

এদিকে রাজ্য সরকারের তরফে টাকাটা তো পাঠানো হয়েছে, কিন্তু সেই সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ নির্দেশিকা! আর এ নির্দেশিকা মানতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। কোথায় কিভাবে টাকা খরচ করতে হবে সেই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে একটি গাইডলাইন বেধে দিয়েছে। আর এই গাইডলাইন রীতিমতো মানতে নারাজ স্কুলগুলি। সকলের একটাই বক্তব্য রাজ্যের তরফে জারি করা গাইড এর মানতে গেলে কোনও কাজই ঠিকঠাক মতন হবে না।

এই প্রসঙ্গে বড় মন্তব্য করেছেন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষাবর্ষের শেষে কম্পোজিট গ্রান্ট-এর মাত্র ২৫ শতাংশ দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা দেওয়া হবে কি না সেটা নিয়ে ও শিক্ষা দফতর কিছু বলছে না। তার ওপর টাকা খরচের এত রকম শর্ত চাপিয়ে দিলে তো স্কুলগুলো অসুবিধায় পড়বে। আমরা দাবি করছি রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করে অবিলম্বে বাকি টাকা স্কুলগুলোকে মিটিয়ে দিক।’’

টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র!

বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, কেন্দ্র এবং রাজ্য যৌথ উদ্যোগে এই কম্পোজ়িট গ্রান্টের টাকা দিয়ে থাকে। সেখানে নাকি গত এক বছরে বছরে এক টাকাও দেয়নি কেন্দ্র। কেন্দ্রের দেওয়ার কথা ৬০% এবং রাজ্যের ৪০%। সেখানে আবার রাজ্য সরকার তার ভাগের ২৫ শতাংশ দিয়েছে। প্রায় আট হাজারও বেশি স্কুলকে এই টাকা দেওয়া হবে। এতে সরকারের খরচ হবে প্রায় ২২ কোটি টাকা। বাকি টাকা আদৌ কবে ছাড়া হবে সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফ থেকে দেওয়া নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে স্কুল পরিচালনার জন্য অনুদান প্রাপ্ত স্কুলগুলির শৌচাগার ও স্কুল পরিষ্কার, পানীয় জলের সুবিধা এবং ল্যাবরেটরি উন্নয়নের জন্য আরও ১০ শতাংশ বরাদ্দ করা হবে। শুধু তাই নয়, বহু স্কুলের বৈদ্যুতিক বিলের খরচা অনেক বেশি থাকে। সেই সমস্ত স্কুলগুলিকে বছরের অতিরিক্ত টাকা দেওয়া হবে। এদিকে সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ী—স্কুল বাড়ির ভাড়া, ক্লাসের প্রয়োজনীয় চক ডাস্টারের মতো অন্যান্য জিনিস কেনা, হাত পরিষ্কার করার সাবান, অফিস স্কুল ও শৌচালয় পরিষ্কার করা, ক্লাসরুমের পরিকাঠামো উন্নয়ন, পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা-সহ একাধিক বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এও বলা হয়েছে, শিক্ষক বা শিক্ষা কর্মীদের মোবাইল বিল, গাড়ির খরচা বাবদ বিল এই সমস্ত কোন খরচ দেওয়া হবে না এই কম্পোজ়িট গ্রান্টে।

কাকে কত টাকা দেওয়ার নিয়ম?

উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্য, কেন্দ্রের উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষার অন্তর্জলী যাত্রার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার ইচ্ছে মতো ক্লাবগুলিকে বা অন্যান্য ক্ষেত্রে বহু সময় অনুদান দিয়ে থাকে। যদি টাকা না থাকে তা হলে সমগ্র মিশনের টাকা থেকে কী ভাবে ট্যাবের টাকা দিচ্ছে সরকার?’’

এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন কাকে কত টাকার দেওয়ার নিয়ম রয়েছে? তালিকা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, পড়ুয়ার সংখ্যা যেখানে ৩০-এর মধ্যে তাদের দেওয়া হবে ২৫০০ টাকা, ৩০ থেকে ১০০র মধ্যে পড়ুয়ার সংখ্যা সেখানে ৬২৫০ টাকা, ১০০ থেকে ২৫০ যেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা সেখানে ১২ হাজার ৫০০ টাকা, ২৫০-১০০০ পড়ুয়া হলে দেওয়া হবে ১৮৭৫০ টাকা। আর হাজারের বেশি যাদের পড়ুয়ার সংখ্যা, তাদের দেওয়া হবে ২৫ হাজার টাকা করে।

সঙ্গে থাকুন ➥
X