প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির বাজারে দিনের পর দিন যেন জিনিস পত্রের দাম লাগামছাড়া ভাবে বাড়ছে। তার উপর আবার রয়েছে চিকিৎসা খরচ। ক্যান্সার থেকে শুরু করে হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার সহ একাধিক রোগের চিকিৎসা করতে আজকাল বহু খরচ পোহাতে হয়। আর তাই দিন দিন স্বাস্থ্য বিমার (Health Insurance) প্রতি মধ্যবিত্তদের বাড়ছে আগ্রহ। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্যবিমা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার দেখা যায়। কখনও হাসপাতালে চিকিৎসা বিল নিয়ে অভিযোগ ওঠে তো কখনও আবার অন্য কারণ। ফলে চূড়ান্ত ভোগান্তিতে পড়েন রোগী ও পরিবার।
১১ টি বিমা সংস্থাকে তলব প্রশাসনের!
তাই তখন রোগীর প্রাণ বাঁচাতে একরকম বাধ্য হয়ে নগদ টাকা দিয়েও চিকিৎসা করাতে হয়। বেশ কয়েকটি বিমা সংস্থার বিরুদ্ধে রোগীর পরিবারের এমনই তথ্য জমা পড়েছে। এই সব সমস্যার সমাধান করতে তাই এবার কঠোর পদক্ষেপ করছে স্বাস্থ্য প্রশাসন। জানা গিয়েছে এবার সরাসরি বিমা সংস্থাগুলিকে তলব করতে চলেছে রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন। আগামী ২১ এপ্রিল আলিপুরের ধনধান্য সভাগৃহে বিমা সংস্থাগুলিকে নিয়ে বৈঠকে বসবে রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন। আর সেই বৈঠকে ১১ টি বিমা সংস্থাকে ওইদিন আলোচনায় ডাকা হয়েছে। আর এই ১১ টি সংস্থার মধ্যে ৪টি আবার সরকারি বিমা সংস্থাও রয়েছে।
তালিকায় কোন কোন বীমা সংস্থা রয়েছে?
যে সকল ১১ টি বীমা সংস্থাকে তলব করা হতে চলেছে সেগুলি হল ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি, ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইনস্যুরেন্স কোম্পানি, নিউ ইন্ডিয়া অ্যাস্যুরেন্স কোম্পানি, ওরিয়েন্টাল ইনস্যুরেন্স, বাজাজ অ্যালায়েনজ জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি নিভা বুপা হেলথ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি, ICICI লোম্বার্ড জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি, স্টার হেলথ অ্যান্ড অ্যালায়েঞ্জ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি, আদিত্য বিড়লা হেলথ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি, রয়্যাল সুন্দরম জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি , টাটা এআইজি জেনারেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি।
জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে কয়েকটি বিমা সংস্থা কিছু সমস্যা নিয়ে কমিশনের কাছে এসেছিল। তাতে অভিযোগ করা হয়েছিল, বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ভুয়ো বিল বানিয়ে বিমার টাকা তুলে নিচ্ছে। তাই সেই ব্যাপারে এবার বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বৈঠকে কমিশনের চেয়ারম্যান-সহ উপস্থিত থাকবেন অন্য আধিকারিকরাও।
আরও পড়ুনঃ দিঘার জগন্নাথ মন্দির ঝাঁট দিতে সোনার ঝাড়ু, ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা মমতার
এই প্রসঙ্গে বাঁকুড়ার ডেপুটি CMOH ডক্টর সজল বিশ্বাস জানিয়েছেন যে, প্রাইভেট মেডিক্লেইম গুলিতে যে পরিমাণ চিকিৎসা পাওয়ার কথা তা রোগীরা পাচ্ছেন না। মেডিক্লেইম সংস্থা যখন পলিসি করায় তখন তার মধ্যে বেশকিছু গোপন এজেন্ডা থাকে যা সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা অনেক শিক্ষিত মানুষের বুঝে ওঠা সম্ভব নয়। ফলে বেসরকারি মেডিক্লেইম কোম্পানির পেছনে বিপুল টাকা ব্যয় করছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু সেভাবে সুযোগ সুবিধে পাচ্ছেন না। মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। তাই খুব শীঘ্রই এই গোটা বিষয়টি রাজ্যের দেখা উচিত। এবং সাধারণ মানুষের কাছে সম্পূর্ণটা তুলে ধরা উচিত।