উধাও ১৩ লাখ পড়ুয়া! খোদ শিক্ষা সংসদের রিপোর্টে চাঞ্চল্য ছড়াল পশ্চিমবঙ্গে

Published on:

students

কলকাতাঃ গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় ফেল ৯৭% পড়ুয়া। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে বাংলায়। ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়াল বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে বাংলায় আরও এক বড় ঘটনা ঘটেছে যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ১৩ লক্ষের মধ্যে মাত্র দেড় হাজার পড়ুয়া নাকি নিজেদের নাম রেজিস্টার করিয়েছেন! কী শুনে চমকে গেলেন তো? কিন্তু এটাই একদম সত্যি।

পাশ করতে ব্যর্থ ১৩ লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া

WhatsApp Community Join Now

একটি সমীক্ষায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। জানা যাচ্ছে, ২০১৬ সাল থেকে শুরু করে চলতি বছর পর্যন্ত ১৩ লক্ষের মতো পড়ুয়া একাদশ থেকে দ্বাদশে উঠতে নাকি ব্যর্থ হয়েছে। আর এই বিষয়টি স্বীকারও করে নিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এদিকে এহেন রিপোর্ট দেখে সকলেরই চোখ কপালে উঠে গিয়েছে। এই ১৩ লক্ষ পড়ুয়ার মধ্যে মাত্র দেড় হাজার পড়ুয়া নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছে। এদিকে চলতি বছর থেকেই সেমিস্টার পদ্ধতি শুরু হচ্ছে। আর এই নতুন পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ স্কুলছুটদের ফের রেজিস্ট্রেশন করিয়ে পড়ার সুযোগ দিতে চায়। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন একদম।

লক্ষ লক্ষ পড়ুয়া স্কুল ছুট

এত পরিমাণে পড়ুয়ার স্কুলছুটের কারণ খুঁজে বের করতে গিয়ে কালঘাম ছুটে গিয়েছে সকলের। ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল অবধি এই স্কুলছুটের সংখ্যা ১৩ লাখে গিয়ে ঠেকেছে। যা কিনা স্বাভাভিকভাবেই সকলের চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। এই বিষয়ে বড় কথা বলেছেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, ‘২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই ১৩ লক্ষের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই স্কুলছুট। যদি ধরা যায় কোনও বছরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় গড়ে সাত থেকে আট লক্ষ পরীক্ষার্থীর নাম রয়েছে, তা হলে নানা কারণে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার পরীক্ষায় বসেন না। চলতি বছরেই যেমন দেখা গিয়েছে, ৭০ হাজারের মতো পরীক্ষার্থী এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে বসেননি, অথচ তাঁরা কিন্তু একাদশে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। যাঁরা বসছেন না, তাঁদের অধিকাংশই ড্রপ আউট। এঁরা হয়তো কেউ কাজে চলে যাচ্ছেন, কেউ ছোটখাটো দোকান খুলছেন। এঁদের আবার ফিরিয়ে আনার জন্যই এ বছর নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে তাঁদের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসানো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।’

পড়াশোনার উৎসাহ হারাচ্ছেন পড়ুয়ারা

এদিকে প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেছেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেও কত জন ভিন রাজ্যে কাজে চলে যাচ্ছেন! একাদশে পাশ করতে না পেরে ড্রপ আউটের প্রবণতা আরও বেশি। কর্মসংস্থান কোথায়? এসএসসি, পিএসসি নিয়োগ নেই। রাজ্যে চাকরি নেই। পড়াশোনার উৎসাহ হারাচ্ছেন পড়ুয়ারা।’ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘অনেক পড়ুয়াই প্রথাগত পড়াশোনায় না-গিয়ে কর্মসংস্থানের পথ খুঁজছেন। প্রথাগত পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমছে। এটা যথেষ্ট চিন্তার।’ আর এই ব্যাপারটি রুখতে স্কুলগুলিকে এগিয়ে আসার বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

সঙ্গে থাকুন ➥