প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Pariksha)। তাই দিন রাত এক করে মন দিতে পড়াশোনা করে চলেছে পরীক্ষার্থীরা। তবে এখানে শুধু পরীক্ষার্থীরাই পরীক্ষা দেবে তা কিন্তু নয়। একপ্রকার পরীক্ষা দেবে গার্ডরাও। আর সেটি হল কঠোর নিরাপত্তার পরীক্ষা। সম্প্রতি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার গার্ড সংক্রান্ত এক কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত নোটিশ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় এই ব্যাপারে স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, পরীক্ষার হলে ঢোকার সময়েই সেই কেন্দ্রের শিক্ষকেরা যেন পরীক্ষার্থীর সঙ্গে মোবাইল বা ইলেকট্রিক ডিভাইস আছে কি-না তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। যদি কেউ কোনও ভাবে নজর এড়িয়ে মোবাইল নিয়ে ঢুকে পড়ে তাহলে ঐ পরীক্ষার্থীকে সেই ফোন জমা দেওয়ার শেষ সুযোগ দেবে যিনি গার্ড দিচ্ছেন। কিন্তু এর পরেও কেউ যদি ফোন জমা না দেয় এবং পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরে ফোন-সহ ধরা পড়ে, তা হলে সেই পরীক্ষার্থীর সমস্ত পরীক্ষা বাতিল করা হবে। এবং ফোনও ফেরত দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুনঃ মাধ্যমিক পাশে RPF-এ চাকরি, ৪২০৮ শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করল রেল
প্রতি বছর বার বার ফোন না নিয়ে আসার জন্য সচেতন করা হয়। এমনকি অভিভাবকদেরও বলা হয়ে থাকে। কিন্তু তবুও অনেকেই লুকিয়ে সকলের নজর এড়িয়ে ফোন নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে পড়ে। যার জেরে পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার মত ঘটনা দিনকে দিন বাড়তেই থাকে। তাই এবার পর্ষদ আরও বড় পদক্ষেপ নিল। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে যদি মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন মোবাইল ফোন-সহ কোনো পরীক্ষার্থী ধরা পড়ে তাহলে পর পর তিন বছর পর্যন্ত ওই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল হতে পারে। এমনটাই জানিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
আরও পড়ুনঃ TRP টপার হতেই নিন্দুকদের জবাব, মুখ খুললেন ‘পরিণীতা’র অভিনেতা উদয় প্রতাপ
এছাড়াও পরীক্ষাকেন্দ্রের নজরদারি নিয়েও নানা নির্দেশিকা প্রকাশ্যে এসেছে। বলা হয়েছে প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে তিনটি জায়গায় সিসিটিভি বসানোটা বাধ্যতামূলক। সেই তিনটি জায়গা হল পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটের মুখ, বারান্দা এবং সুপারভাইজারের অফিসে। সেই সিসিটিভির ফুটেজ অন্তত ছয় মাস রেখে দিতে হবে। পাশাপাশি পরীক্ষার্থীরা শৌচাগারে বা পরীক্ষা কেন্দ্রের অন্য কোথাও ফোন রেখেছে কি না, তাও নজর রাখার নির্দেশ শিক্ষকদের।
অভিভাবকদের সতর্কবার্তা দিলেন পর্ষদ সভাপতি
আসলে গত বছরেও পরীক্ষা চলাকালীন যে সব পরীক্ষার্থীর কাছে ফোন পাওয়া গিয়েছিল, তাদের ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, সেই সব পরীক্ষার্থীর বাড়ির লোক পরীক্ষা চলাকালীন ফোন করে করে জানতে চেয়েছেন, তারা পরীক্ষার হলে ঠিকমতো পৌঁছেছে কি না, ফোন সঙ্গে আছে কি না। যা অত্যন্ত আশ্চর্যজনক। এই বিষয়ে রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, “বহু অভিভাবকের সচেতনতার এতটাই অভাব যে মাধ্যমিক পরীক্ষার মত জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার ক্ষেত্রে এত বড় ভুল করছেন তাঁরা। তাই অভিভাবক অভিভাবিকাদের উচিত পরীক্ষার্থীদের এই বিষয়ে সচেতন করা।”