প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে ক্রমাগত বিদ্যুৎ চুরিকে কেন্দ্র করে রাশি রাশি অভিযোগ জমা পড়ছে প্রশাসনের দপ্তরে। বিগত অর্থবর্ষে বিদ্যুৎ চুরির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়ে প্রায় দু’কোটি টাকা জরিমানা আদায় করে বিদ্যুৎ দপ্তর। তাই সেই সমস্যা দূর করতে জেলায় জেলায় স্মার্ট মিটার (WBSEDCL Smart Meter) বসানো হয়েছে। কিন্তু এবার সেই স্মার্ট মিটার বসানো নিয়ে কর্মীদের মনে তৈরি হল চাকরি ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা। কাজ চলে যাওয়ার ভয়ে কুঁকড়ে গিয়েছে সকলে। এই আবহে তাই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্মীরা।
স্মার্ট মিটার গিলে খাচ্ছে কর্মসংস্থান!
সম্প্রতি রাজ্যে পুরনো মিটারগুলির পরিবর্তে স্মার্ট মিটার (WBSEDCL Smart Meter) বসানো হয়েছে। এই প্রযুক্তির উন্নয়নে একদিকে যেমন বিদ্যুৎ চুরির সমস্যা দূর হবে ঠিক তেমনই অফিসের কর্মীদের আর বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার দেখে আসতে হবে না। স্মার্ট মিটারের সাহায্যে অফিসেই বসেই জানা যাবে, কোন গ্রাহক কত বিদ্যুৎ খরচ করেছেন। অর্থাৎ কাজের গতি বৃদ্ধি করে অল্প সময়ে অনেক বেশি কাজ করা যাবে।
কিন্তু রাজ্য সরকার এমনই ব্যবস্থা করাতেই বিপদে পড়েছেন অসংখ্য কর্মী, যাঁরা বাড়ি গিয়ে মিটার রিডিং নেন। তাঁদের অভিযোগ, এখন স্মার্ট মিটার বসানো হচ্ছে, তাই তাঁদের আর কাজে লাগছে না। এমনকি সংস্থাও তাঁদের অন্য কোনও কাজও দিচ্ছে না। ফলত, বেকারত্বের শঙ্কা বাড়ছে।
আন্দোলনের ডাক বিদ্যুৎ কর্মীদের
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র কলকাতা শহরেই এমন প্রায় হাজার খানেক কর্মীর রুজিরুটি অনিশ্চয়তার মধ্যে চলে গিয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে এইমুহুর্তে কলকাতা শহরেই প্রায় হাজার খানেক কর্মীর রুজিরুটি অনিশ্চয়তার মধ্যে চলে গিয়েছে। বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে কাজ করেন, এমন এক ঠিকাদার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ”স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হলে তাঁদের সংস্থার প্রায় দেড় হাজার কর্মী চাকরি হারাবেন। তাই, তাঁদের চাকরি বাঁচাতে আমরা আন্দোলনের পথে হাঁটার কথা ভাবছি।”
অন্যদিকে WBSEDCL কন্ট্রাক্টরস ওয়াকম্যান ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোপাল বিশ্বাস বলেন, “আমাদের প্রায় ১৫ হাজার কর্মীর চাকরি চলে যেতে পারে। তাই আমরা আন্দোলনের কথা ভাবছি।”
আরও পড়ুন: বকেয়া ২৫% DA পেলেও মিলবে গ্র্যাজুইটি ও লিভ এনক্যাশমেন্ট? প্রকাশ্যে বড় আপডেট
বিরোধীদের তরফে উঠে এল কটাক্ষ!
এমনকি চাকরি চলে যাওয়ার বিতর্কের সুর তৈরি হয়েছে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে। তাঁদের বক্তব্য, ২০০৩ সালের বিদ্যুৎ আইনে কেউ চাইলে স্মার্ট মিটার নিতে বাধ্য করা যায় না। কিন্তু রাজ্য সরকার জোর করে মানুষকে এই মিটার নিতে বাধ্য করছে। এতে অনেকের অসুবিধা হবে। এদিকে বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা বলছেন, স্মার্ট মিটার একটি অত্যাধুনিক মিটার। যার সঙ্গে সরাসরি ইন্টারনেটের যোগ থাকবে। এই মিটার লাগানো হলে গ্রাহকরা উপকৃতই হবেন। আসলে এই স্মার্ট মিটার হল এমন একটি মিটার, যেখানে একটি সিম কার্ড থাকবে, এবং দুই যা ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।
আর এই স্মার্ট মিটারে যদি কোনও গ্রাহক আগাম টাকা না ভরেন, তাহলে অফিস থেকেই তাঁর মিটার বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে টাকা পয়সা না থাকলেও ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে, পরে সেই টাকা দিতে হবে। এখন যে মিটারগুলি রয়েছে, সেগুলো স্মার্ট নয়। তাই এখনও কয়েক জায়গায় বাড়ি গিয়ে দেখতে হয়, মিটার কত দেখাচ্ছে। কিন্তু শীঘ্রই এই পথে হাঁটতে চলেছে সরকার।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |