শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ হাওড়ায় (Howrah) ঘটল এক বিরল ঘটনা। শোরগোল পড়ে গেল এলাকায়। এমনকি স্থানীয় লোকজন বললেন, এরকম আগে কখনও দেখননি। কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে জার্মান দেশের রূপকথার সঙ্গে সাময়িকভাবে জুড়ে গেল হাওড়া জেলার শ্যামপুর এলাকার নাম।
ঘটনাটা কী?
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, শ্যামপুর থানার অন্তর্গত সাঁইবেড়িয়া গ্রামের শুভাশিস মন্ডল ইট সরানোর কাজ করছিলেন। ইট সরানোর কাজ করতে গিয়েই তাঁর বিস্ময়ের শেষ নেই। ইট যেই সরিয়েছে, সে দেখে দু’টো সাপ। সাপ তো বাংলার গ্রামেগঞ্জে অনেক দেখতে পাওয়া যায়। কোন সাপ বিষধর, কোন সাপ নির্বিষ, সে ব্যাপারে গ্রামবাসীরা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তাহলে গ্রামের ছেলে শুভাশিস বিস্মিত হলেন কেন?
আসলে শুভাশিস যে দু’টো সাপকে দেখেছিলেন, সেগুলোর মধ্যে একটি তাঁর খুব একটা পরিচিত ছিল না। সাদা রঙের সাপ। অন্য একটা সাপের গায়ে রঙ থাকলেও, অন্য সাপটির গায়ের রঙ প্রায় সাদা। শুভাশিস লেখাপড়া জানা ছেলে। হঠকারী কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়ে সে ফোন করে তাঁর শিক্ষককে। সেই শিক্ষক ফোন করেন স্থানীয় পরিবেশ প্রেমী সংগঠনের কাছে। পরিবেশ কর্মীরা এসে সাপ দু’টোকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়ে বনে ছেড়ে দিয়ে এসেছেন বলে জানা গিয়েছে।
উদয়কাল সাপ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য
বনকর্মীরা এসে উদ্ধার কার্য শুরু করার আগে ততক্ষণে সাপ দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন স্থানীয় এলাকার লোকজন। সাপের প্রজাতি বোঝার চেষ্টা করে সবাই ব্যর্থ। কেউ বলতে পারলেন না এই সাপ দু’টো কোন প্রজাতির। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সাপ দুটোকে চিনতে পেরেছেন। বাংলায় এই সাপকে বলা হয় ‘উদয়কাল’। কিন্তু উদয়কাল সাপ তো সাদা হয় না। তাহলে দু’টি সাপের মধ্যে একটি সাদা কেন? সাদা কারণ সাপটি আদপে অ্যালবিনো। অ্যালবিনো হল জীব জগতের এমন একটি বৈশিষ্ট্য যার ফলে প্রাণী দেহের স্বাভাবিক রঙ সাদা কিংবা ফ্যাকাসে হয়ে যায়; চোখের রঙ থাকে লাল। হাওড়ার শ্যামপুর গ্রাম থেকে পাওয়া সাদা সাপটিও এই বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। জার্মান উপকথায় একটি সাদা সাপের উল্লেখ রয়েছে। তাই এখন কেউ কেউ বলছেন, জার্মান উপত্যকার সাদা সাপের দেখা মিলল পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায়।