TCS ছেড়ে UPSC ক্র্যাক করে IPS, আজও বহু মানুষের কাছে ভগবান ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়

Published on:

indira mukherjee ips

কলকাতাঃ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে হেনস্থা মামলা থেকে শুরু করে আরজি কর-কাণ্ড, সবেতেই তদন্তে নেমে রীতিমতো সকলের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। সবথেকে তো বেশি আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে এবং সমগ্র পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠেছে সাধারণ মানুষের। আজ কথা হচ্ছে দাপুটে পুলিশ অফিসার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে। বর্তমানে তিনি ডিসি সেন্ট্রালের পদে রয়েছেন। সম্প্রতি তাঁকে উদ্দেশ্য করে ‘আরজি করের চিকিৎসকের মতো হাল হবে’,ও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে হাজারো হুমকি, বিতর্ক সামলে নিজের দায়িত্বে এবং কথায় অটুট থেকেছেন এই পুলিশ আধিকারিক। কিন্তু আপনি কি জানেন যে তিনি কিন্তু বরাবর পুলিশ ছিলেম না? ছিলেন একজন আইটি কর্মি?

কে এই ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়?

WhatsApp Community Join Now

অনেকেই হয়তো জানেন না যে তিনি একজন আইটি বা প্রযুক্তি কর্মী ছিলেন, তাও কিনা টাটার কোম্পানিতে চাকরি করতেন। চাকরি করতেন টিসিএসে। তাঁর জন্ম ১৯৮৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর। কেরিয়ারের শুরুর দিকে আইটি ফিল্ডে হাত পাকিয়েছিলেন। কম্পিউটার সায়েন্স তো নাকি একদম গুলে খাওয়া। স্কুলজীবনে ভুটান ও কলকাতায় পড়াশোনা করেছেন ইন্দিরা। পুলিশের উচ্চপদে থাকা ইন্দিরা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়েও পড়াশোনা করেছেন তিনি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে ইন্দিরার। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমাও অর্জন করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর আইপিএস হিসেবে কাজ করার ইচ্ছা জাগে তাঁর। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ২০১৩ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হন।

বিভিন্ন দায়িত্ব সামলেছেন

নিজের কর্মজীবনে ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বেশ কিছু দায়িত্ব সামলেছেন। আর নিজের কাজের জন্য সরকারের তরফ থেকে বহু পুরষ্কারও পেয়েছেন তিনি। উত্তর দিনাজপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। পরবর্তীতে ঝাড়গ্রাম ও পূর্ব মেদিনীপুর দুই জেলাতেই পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এছাড়া বিধাননগর কমিশনারেটের ডিসি পদে ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রালের দায়িত্বে রয়েছেন।

এই জেলার মানুষের কাছে ‘মসিহা’ ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়

জানলে অবাক হবেন, এক মহিলার প্রাণ বাঁচিয়ে উত্তর দিনাজপুরের রাগঞ্জের মানুষের কাছে ‘মসিহা’ হয়ে উঠেছেন ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। ২০১৭ সালে যখন তিনি উত্তর দিনাজপুর এএসপি পদে ছিলেন তখন রায়গঞ্জ থেকে একদিন কাজ সেরা নিজের কর্ণজোড়ার বাংলোতে ফিরছিলেন তিনি। কিন্তু সেদিন দেখেন রাস্তার ওপর একটি মহিলা বসে রয়েছেন। সাইকেল থেকে নেমে মহিলার কাছে যান। গিয়ে দেখেন ওই মহিলার শ্বাসনালি কাটা। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় হাসপাতালে তিনি যোগাযোগ করেন ও মহিলাকে দ্রুত নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তিনি। পরে নাকি জানা যায়, ওই মহিলাকে খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, ওই মহিলাকে ঠিক সময়ে তিনি হাসপাতালে নিয়ে না গেলে বাঁচানোই অসম্ভব হত। আর এরপর থেকেই নাকি ইন্দিরা মুখপাধ্যায়কে ভগবানের চোখে দেখেন রায়গঞ্জের মানুষ।

বহু পুরষ্কার পেয়েছেন, জুটেছে সমালোচনাও

চলতি বছরের স্বাধীনতা দিবসে চারজন আইপিএস অফিসারকে পুলিশ মেডলের জন্য বেছে নেওয়া হয়। যার মধ্যে অন্যতম ছিলেন এই ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। এদিকে সম্প্রতি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে এক মহিলাকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় একটি বিশেষ টিমের দায়িত্বে ছিলেন ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস সেই সময় আইপিএস ইন্দিরার বিরুদ্ধে কেন্দ্রের কাছে নালিশ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, রাজ্যপালের নামে যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তাতে উৎসাহ দিচ্ছেন আইপিএস অফিসার। যাইহোক, এতকিছুর মধ্যেও নিজের কাজ করে চলেছেন আইপিএস ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়।

সঙ্গে থাকুন ➥