পশ্চিমবঙ্গে সবথেকে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা, আসল কারণ ফাঁস করল IIT খড়গপুর

Published on:

road accident

প্রীতি পোদ্দার, খড়গপুর: রাজ্যে বাড়ছে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। নিত্য নতুন ব্ল্যাক স্পটের সংখ্যা বাড়ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা হয়েছে রাজ্যে বছরে গড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ পথ দুর্ঘটনায় মারা যান৷ আর তাই পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা কমাতে এবার পলিসি রিপোর্ট বানানোর উদ্যোগ নিয়েছিল খড়গপুর IIT।

কী বলছেন ভার্গব মৈত্র?

WhatsApp Community Join Now

সূত্রের খবর, সেই রিপোর্ট গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারকে জমা দেওয়া হয়। খড়গপুর IIT এর দেওয়া সেই রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে ভুল দিকনির্দেশনা, ভুল রোড ইঞ্জিনিয়ারিং, গতির ফারাক, নজরদারির অভাব এর কারণেই রাস্তায় এত দুর্ঘটনা ঘটে। খড়গপুর IIT-র যে বিশেষ টিম পরিবহণ দপ্তরের হয়ে দুর্ঘটনা কমানোর যে সকল কাজ করছে তার নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক ভার্গব মৈত্র৷ তিনি জানাচ্ছেন, “গতি হচ্ছে দুর্ঘটনার আসল কারণ৷ সেই গতি নিয়ন্ত্রণে একাধিক ব্যবস্থা রাখা উচিত। তাই সেই কারণে আমরা একটি স্পষ্ট রিপোর্ট প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি।”

রিপোর্টে কী কী তথ্য উঠে এসেছে?

তাঁদের রিপোর্টে যে যে বিষয়গুলি উঠে এসেছে সেগুলি হল–

  1. চালকদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের হাইওয়ে ধরে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা একদমই নেই বা খুবই কম। তাঁরা উত্তেজনার বশে হাইওয়েতে গাড়ি চালায়।
  2. রাস্তায় যথাযথ নির্দেশিকা নেই। ফলে পথচারী বা গাড়ি চালক কেউই জানেন না তাঁদের যাতায়াতের উপায় কী?
  3. গাড়ির গতি যথাযথ নয়। সেই গতি রাস্তা ধরে ধরে ঠিক করতে হবে।
  4. VIP বা VVIP গাড়ির ড্রাইভাররা ভেবে থাকেন যে তাঁদের পুলিশ ধরতে পারবে না। ফলে তাঁরা রিস্ক নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন।
  5. অ্যাম্বুলেন্স বা দমকলের গাড়ির চালকও প্রচণ্ড গতি নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যেখান দিয়ে বেরোচ্ছেন, সেখানে আদৌ ওই গতিতে যাওয়া যাবে কিনা সেটা তাঁরা জানেন না।
  6. বারবার বলার পরেও পথচারীরা সচেতন হচ্ছেন না। গাড়ির সামনে দিয়েই তাঁদের দৌঁড়ে রাস্তা পার হতে হয়।
  7. জাতীয় সড়ক ধরে টোটো যাচ্ছে। জাতীয় সড়ক ধরে তীব্র গতিতে যাচ্ছে মোটরবাইক। এগুলো যে স্লো মুভিং ভেহিক্যালস করিডর নয়, সেটা তাঁরা বুঝতে চাইছেন না। এমনকি ভ্যানও যাচ্ছে হাইওয়ে দিয়ে।
  8. হাইওয়ে মানেই ১০০ কিমি/ঘণ্টা এই ধারণ হয়ে আছে। কিন্তু সেই হাইওয়ে জনবহুল এলাকা ধরে গেলে সেটা তো আর ১০০ কিমি/ঘণ্টা গাড়ি যাওয়ার নয়।
  9. জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ একাধিক জায়গায় রাস্তা চওড়া করছে। কিন্তু সেই হাইওয়ের পাশে একাধিক স্কুল যে রয়েছে তা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই। (ডানকুনি থেকে খড়গপুর এই অংশে প্রায় ৮০টি স্কুল আছে)
  10. গ্রামে স্টেট হাইওয়ে দারুণ হয়েছে। ফলে গাড়ি চলছে দ্রুত। আর এই রাস্তাতেই উঠে পড়ছে সাইকেল। নজরদারি নেই। তাই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হচ্ছে।
  11. হাইওয়েতে ৩০ কিমি সর্বনিম্ন ও ৫০ কিমি সর্বোচ্চ এলিভেটেড করিডরে গতি বাড়ানো যায়। কারণ ওখানে সাইকেল বা ট্রাক ওঠে না। টু-হুইলার ৫০ কিমি/গতি বেঁধে রাখা উচিত।
  12. গাড়ির দেরি হচ্ছে এটা নিয়ে বেশ ভাবনাচিন্তা হলেও মানুষের কী কী ক্ষতি হচ্ছে সেটা দেখা হচ্ছে না। আর রাতে গাড়ি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হল দৃশ্যমানতা।
সঙ্গে থাকুন ➥
X