বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাত: বর্ধমান থেকে দুর্গাপুরের দিকে যাচ্ছিলাম, বাইকের স্পিডও খুব একটা বেশি ছিল না। দুর্গাপুর হাইওয়ে এক্সপ্রেস রোডে (Durgapur Expressway) তখন গতি বাড়িয়ে একে অপরের সাথে রেষারেষিতে ব্যস্ত 10-12 পেয়ো (চাকা) লরি গুলি। এমন সময়ে কী যেন একটা উড়ে এসেছে চোখে! ঠিক ঠাহর করতে না পারায় বাইকের হ্যান্ডেলটা শক্ত করে ধরেছি এমন সময়ে দ্রুত গতিতে ছুটে আসা একটি লরি একেবারে আমাকে চেপে দিয়ে বেরিয়ে গেল। আরেকটু হলেই পাশের জঙ্গলে গিয়ে পড়তাম। তবে সৌভাগ্য যে, তেমনটা হয়নি।
কোনও মতে নিজেকে সামলে বাড়ি ফিরি। সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমের পাতায় চোখে পড়ল ঠিক একই ঘটনা। তবে এবার নাকি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি। দাদার গাড়িকেও একই ভাবে চেপে দিয়ে বেড়িয়ে গেছে একটি লরি। খবরটা ভাল করে পড়তেই জানলাম, ঘটনাটি ঘটেছে দাঁতনপুর নামক একটি জায়গায়। তবে কোনও মতে ড্রাইভারের কৃপায় রক্ষা পেয়েছে দাদার কনভয়।
প্রাণে বেঁচেছেন সৌরভ
বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম দাবি করছে, বৃহস্পতিবার বর্ধমানের একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত থাকায় সেই উদ্দেশ্যেই রওনা দিয়েছিলেন মহারাজ। দুর্গাপুর হাইওয়ে এক্সপ্রেস রোডে দাদার রেঞ্জ রোভার গাড়িটিকে স্কোয়াড করে নিয়ে যাচ্ছিল নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশ কর্মীরা। জানা যায়, কয়েক পশলা বৃষ্টিও হচ্ছিল সেই সময়। আচমকা গতি বাড়িয়ে সৌরভ গাঙ্গুলীর কনভয়ের একেবারে কাছে চলে আসে একটি লরি। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারের গাড়ির কাছে পৌঁছতেই ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত কিনা জানিনা মহারাজের গাড়িটিকে চেপে দিয়ে বেরিয়ে যান লরির চালক।
সূত্র বলছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে কোনও মতে ব্রেক কষেন সৌরভের ড্রাইভার। রক্ষা পান দাদাগিরির সঞ্চালক। তবে অস্বস্তির বিষয়, সৌরভের গাড়িটি আচমকা দাঁড়িয়ে যাওয়ায় কনভয়ের বাকি গাড়িগুলিও একে অপরকে ধাক্কা মারে। সৌরভ গাঙ্গুলীর পিছনের গাড়িটিও গতি সামলাতে না পেরে মহারাজের গাড়িতে ধাক্কা মেরেছিল। তবে রিপোর্ট বলছে, দুর্গাপুর হাইওয়ে এক্সপ্রেস রোডের দুর্ঘটনায় আহত হননি কেউই। যদিও সৌরভের নিরাপত্তা রক্ষীরা দাবি করেছেন, লরিটি দাদার গাড়িকে একেবারে চেপেই দিয়েছিল। তবে ভাল মানের রেঞ্জ রোভার হওয়ায় কোনও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেনি।
সৌরভের সাথে ঘটা দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা রয়েছে বাকিদেরও
বিভিন্ন সময়ে দুর্গাপুর হাইওয়ে এক্সপ্রেস রোডে ঘটা নানান দুর্ঘটনার খবর কানে আসতেই প্রশ্ন ওঠে কেন বারংবার দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের? তবে একটি প্রশ্নই থেমে থাকেনি দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপট। সূত্রের খবর, মাঝেমধ্যেই দুর্গাপুর হাইওয়ে এক্সপ্রেস রোডে দুর্ঘটনার শিকার হন পথ চলতি মানুষজন। সম্প্রতি India Hood-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হুগলির এক বাসিন্দা দাবি করেছেন, তিনিও তাঁর পরিবার নিয়ে দুর্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন।
গাড়ির চাকা যখন দুর্গাপুর হাইওয়ে এক্সপ্রেস রোডে পড়ল তার কিছু সময়ের মধ্যে রাস্তায় থাকা লরি ও ডাম্পার গুলির বাড়বাড়ন্তে একপ্রকার নাজেহাল হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এমন সময়ে নিজের ড্রাইভিংয়ে মনোযোগ দিয়ে পাশের গাড়িগুলিকে ছেড়ে দিচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি। ঠিক সেই সময়ে আচমকা একটি ডাম্পার গতি বাড়িয়ে একেবারে চেপে দিয়ে বেরিয়ে যায় তাঁকে। ব্যক্তির দাবি, সেদিন ভগবানের আশীর্বাদে কোনওমতে বউ, বাচ্চা নিয়ে প্রাণ বেঁচে গিয়েছিলাম।
সেদিন কোনও মতে প্রাণ হাতে করে ফিরেছিলেন তিনি। একই অভিজ্ঞতা রয়েছে দুর্গাপুর হাইওয়ে এক্সপ্রেস রোডের নিত্য যাত্রীদের। তাদের সিংহভাগেরই দাবি, মূলত রাস্তায় উঠতেই হাতির পাঁচ পা দেখে ফেলে লরি গুলি। কোনও ট্রাফিক আইনের তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া ভাবে একে অপরকে ওভারটেক করতে গিয়েই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে দুর্গাপুর হাইওয়ে এক্সপ্রেস রোডে।
আরও পড়ুন: TRP তালিকায় ঝড় তুলবে ডাবল রোল, ‘পরশুরাম আজকের নায়ক’র দিনক্ষণ সহ টাইমস্লট
প্রসঙ্গত, স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ মনে করছেন, দুর্গাপুর হাইওয়ে এক্সপ্রেস রোডে লরি ও ডাম্পার চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণেই সম্প্রতি এমন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সেলিব্রেটিদের। ভবিষ্যতে যাতে দুর্গাপুর হাইওয়ে এক্সপ্রেস রোডের মতো জাতীয় সড়কে প্রাণনাশক ঘটনা না ঘটে, তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন থেকে পুলিশ কর্তা সকলকেই এক জোট হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। প্রশাসনকে দুর্ঘটনা এড়ানোর পথ বাতলে দেওয়ার পাশাপাশি দুর্গাপুর হাইওয়ে এক্সপ্রেস রোড লাগোয়া সিভিক ভলেন্টিয়ার ও পুলিশ কর্মীদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা অংশ।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |