প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: জনসাধারণের কল্যাণ এবং স্বার্থসিদ্ধির জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার একের পর এক জনহিতকর প্রকল্প চালু করে চলেছেন। আর এই জনহিতকর প্রকল্প গুলির মধ্যে অন্যতম হল লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প। এই প্রকল্প শাসকদলের ঘুরে দাঁড়ানোর একপ্রকার হাতিয়ার বলা যায়। পাশাপাশি উপকৃত হয়েছে হাজার হাজার মহিলা। রাজ্যের নির্দেশিকা অনুযায়ী জানা গিয়েছে লক্ষ্মীর ভান্ডার পেতে গেলে মহিলার বয়স ২৫ বছর হতেই হবে। কিন্তু সম্প্রতি এই প্রকল্পকে ঘিরে বালুরঘাটে ঘটে গিয়েছে এক প্রতারণামূলক ঘটনা। ভুয়ো আধার কার্ড দেখিয়ে প্রকল্পের গ্রাহক হতে এসেছেন এক মহিলা।
ঘটনাটি কী?
ঘটনাটি ঘটেছে, বালুরঘাট বিডিও অফিসে। অভিযুক্তের নাম ভারতী দেবনাথ। তিনি বালুরঘাটের জগদীশপুরের বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে ভুয়ো আধার কার্ড তৈরির। জানা গিয়েছে, আসল আধার কার্ডে কারচুপি করে বাড়ানো হয়েছে বয়স এবং বদল করা হয়েছিল ঠিকানা। তবে নকল আধার কার্ডেও রেখেছিল আসল আধারের নম্বর। আর এই কারণে নিজের ব্লক থেকে অন্য ব্লকে আবেদন করেছিলেন।
আধার কার্ডে ৪ বছর বয়স বাড়ানো হয়েছে!
এদিকে আধার কার্ডের তথ্য অনুযায়ী দেখা গিয়েছে, ভারতী দেবনাথ এর জন্ম ২০০১ সালের অক্টোবর মাসের ৮ তারিখে। কিন্তু এদিকে জাল আধার কার্ডে দেখা যাচ্ছে গৃহবধূর জন্মের সাল হল ১৯৯৭। আসল বয়স ২১ বছর হলেও সেই ভুয়ো আধার কার্ডে যথারীতি দেখানো হচ্ছে ২৫ বছর। আর ইচ্ছাকৃত ভাবে পরিকল্পনা করেই ঝাপসা করে দেওয়া হয়েছে ওই মহিলার ছবি বা অন্য তথ্যগুলো। যাতে পরিষ্কার বোঝা না যায়। সেই ভুয়ো আধার কার্ড নিয়েই তিনি গতকাল বালুরঘাট ব্লক অফিসে আসেন। আবেদন করেন লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য। সেই নথি অফিসের কর্মীরা যাচাই করতে গেলে নজরে আসে কারচুপির বিষয়টি।
কী বলছেন বিডিও অফিসার?
বিষয়টি যখন বিডিও অফিসে জানাজানি হয়ে যায়, ঠিক তখনই সেই চত্বর থেকে কোনো রকমে পালিয়ে যায় সেই অভিযুক্ত মহিলা। এই ঘটনায় বালুরঘাটে বিডিও সম্বল ঝাঁ জানিয়েছেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডারের ফর্ম ফিলাপের জন্য মহিলার বয়স ন্যূনতম ২৫ বছর হতে হয়। উনি সেই লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য তথ্য দেওয়ার সময় একটা আধার কার্ড দেন। যেটা দেখে প্রথমেই সন্দেহ হয়। তারা আমার কাছে নিয়ে আসেন। এরপর ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখি এই ভদ্রমহিলার নামে আধার কার্ড রয়েছে। সেখানে আসল বয়স ২১ লেখা রয়েছে। এমনকি ঠিকানাও চেঞ্চ করেছেন। এরপর জিজ্ঞাসা করতেই উনি পালিয়ে যান। তাতেই গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়।”