প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়। আর তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শস্য ব্যবস্থার। জমিতে জল জমে, ফসল খুবই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি খাদ্যের অভাবে চাষের জমিতে যখন তখন হামলা চালাচ্ছে পশুরা। কিন্তু রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার কেউই সঠিকভাবে সাহায্য করছে না। তাতেই এবার ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে শ্রমিক এবং কৃষক সংগঠন। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিক্ষোভ আন্দোলনের।
খবর অনুযায়ী, গতকালের কর্মসূচিতে সিআইটিইউ, আইএনটিইউসি, সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা, পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভা, এআইটিইউসি, টিইউসিসি সংগঠনগুলো অংশগ্রহণ করেছিল। তাঁদের এই বিক্ষোভের মূল দাবি ছিল কৃষক ও গ্রামের শ্রমজীবীদের মাসে ১০ হাজার টাকা পেনশন দেওয়া, কৃষিপণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য আইন প্রণয়ন, কৃষি ঋণ মকুব, বিদ্যুৎ বিল বাতিল, শ্রমকোড বাতিল, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ও পরিষেবার বেসরকারিকরণ বন্ধ, বকেরা মজুরি ও বছরে কমপক্ষে ২০০ দিনের কাজ, দুর্নীতি ও নানা কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও শাস্তি, ভীতির যে বাতাবরণ তা বন্ধ করা এবং মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা।
বিভিন্ন জেলা শহরে ছড়িয়ে পড়েছে আন্দোলন!
বর্ধমান, বাঁকুড়া, চুঁচুড়া, বারাসত, কৃষ্ণনগর, কাকদ্বীপ, হাওড়া, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ও জেলা শহরে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের মাধ্যমে দাবিপত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দফতরে পাঠিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেই সঙ্গে, আলু ও অন্য আনাজ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় সার ও বীজও অত্যন্ত চড়া দামে চাষিদের কিনতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। পাশাপাশি, ধর্মের নামে ‘বিভাজনের রাজনীতির’ বিরোধিতা করেছেন শ্রমিক-কৃষক নেতারা।
কী বলছেন কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক?
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার পক্ষে পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার এই প্রসঙ্গে বলেন, “বন্য পশু-পাখি খাদ্যের অভাব মেটাতে ফসলের খেতে ক্রমাগত হানা দিয়েই চলেছে। যার ফলে ফসলের নানা ক্ষতি হচ্ছে। এদিকে তার কোনও ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না রাজ্য সরকার । এসব জুলুম আর চলতে দেওয়া যাবে না। তাই জেলা থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে শহরে সহ গোটা রাজ্য জুড়ে সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিবাদে নেমেছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা।”
সিআইটিইউ পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনাদি সাহু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি দিলেও দেশের কৃষকরা সহায়ক মূল্য পাননি । বড় বড় ফড়েদের হাতে কৃষিপণ্যের বাজারের নিয়ন্ত্রণ চলে গিয়েছে । গরিব কৃষক কোনও সাহায্যই পাচ্ছেন না । প্রাকৃতিক দুর্যোগে রবি ফসল শেষ হয়ে গেলেও নেই ক্ষতিপূরণ । আলু চাষিরা আবার কঠিন পরিস্থিতির সামনে । প্রতিদিনই তাঁদের চরম পথ বেছে নেওয়ার খবর আসছে । বীজ, সার, সেচের জল সবটাই হাতের নাগালের বাইরে।”