কলকাতাঃ আরজি কর-এর ঘটনায় ফের হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়তে হল কলকাতা পুলিশকে। ইতিমধ্যে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে রাজ্য ও রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিবিআইকে এই বিষয়ে সাহায্য করার জন্য। যদিও আরজি করকাণ্ডে এক নয়া মোড় নিয়েছে। গত ১৪ আগস্ট হাসপাতালে ঢুকে বহু দুষ্কৃতী হামলা চালায়। সিসিটিভি থেকে শুরু করে ফার্মেসি, ডাক্তারদের চেম্বার ভাঙচুর করা হয়। এদিকে এই ঘটনাতেই এবার পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট
বিরোধীদের দাবি, আরজি কর কাণ্ডে যে তাণ্ডব চালানো হয়েছিল তা কেন রুখতে পারল না পুলিশ? পুলিশ কি কিছুই জানত না? এদিকে এই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, পুলিশের ইনটেলজেন্স সম্পূর্ণ ব্যর্থ। হ্যাঁ ঠিক এ ভাষাতেই কথা বলে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
আরজি করকাণ্ডে ভুরি ভুরি পিটিশন জমা পড়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এরপর আজ শুক্রবার এই পিটিশনগুলি নিয়ে শুনানি চলছিল। এরপরেই সবকিছু দেখে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের পর্যবেক্ষণ, পুলিশের ইনটেলিজেন্স সম্পূর্ণ ব্যর্থ। নিজেদের পুলিশকে যারা রক্ষা করতে পারেনি, কীভাবে চিকিৎসকরা কাজ করতে পারবেন বলে আশা করা যায় সেখানে? এদিন প্রধান বিচারপতি হনুমান জয়ন্তীর সময়ে বাংলায় হওয়া সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে গর্জে ওঠেন। বলেন, একই ঘটনা হয় হনুমান জয়ন্তীতে। ইন্টেলিজেন্স থাকে তো পুলিশের। এটা থেকে স্পষ্ট পুলিশের ইন্টেলিজেন্স সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ১০০ জনের বেশি অনুমতি পায় না। কেন হাজার জনকে অনুমতি দেওয়া হল? পাল্টা রাজ্যের তরফে জানানো হয়, গোটা কলকাতাতেই বিক্ষোভ ছিল। প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, রাজ্য প্রসাশন সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
৭০০০ লোকের জমায়েত!
মামলার শুনানিপর্বে রাজ্যের তরফে আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘সাত হাজার মব হঠাৎ চলে আসে। ভিডিয়ো দেখানো হবে। পুলিশ যথেষ্ট চেষ্টা করেছে। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার আহত হন। ১৫ জন পুলিশ আহত হন। তবে সেমিনার রুমের ক্ষতি হয়নি।’
এদিকে রাজ্যকে উদ্দেশ্যে করে একের পর এক তির্যক বাণ ছুঁড়তে থাকেন প্রধান বিচারপতি। পরিস্থিতি সঠিকভাবে সামাল না দেওয়ায় রাজ্য সরকারকে তিরস্কার করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপনারা যে কোনও কারণে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করছেন। যখন এত হট্টগোল হচ্ছিল, তখন এলাকা ঘিরে ফেলা উচিত ছিল।” তিনি আরও বলেন, ‘৭ হাজার মানুষ হাঁটতে আসতে পারে না। ” উল্লেখ্য, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভাঙচুর ও হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।