কলকাতাঃ যত সময় এগোচ্ছে ততই আরজি কর-কাণ্ডে বিক্ষোভের মাত্রা বাড়ছে বাংলা তথা দেশজুড়ে। জায়গায় জায়গায় চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। সর্বোপরি ২০ থেকে ২১ দিন কেটে গেলেও ‘বন্ধু’-র সঙ্গে ঘটে যাওয়া বীভৎস ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তাররা। শুধু এখানকার জুনিয়র ডাক্তাররাই নয়, সমগ্র দেশের চিকিৎসকরা এই বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। এদিকে এহেন ঘটনার জেরে মাশুল গুনতে হচ্ছে সাধারণ রোগী ও রোগীর পরিজনদের। ইতিমধ্যে বলাবলি শুরু হয়েছে, দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। তারপরেও ন্যায় বিচার না পাওয়া অবধি এই বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এমনকি তাঁরা সুপ্রিম কোর্ট এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘হুমকি’-কেও পরোয়া করেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরজি কর-কাণ্ডে উত্তাল দেশ
গত ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে বছর ৩১-এর এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তে উঠে এসেছে, ওই তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এদিকে এহেন ঘটনার বীভৎসতায় রীতিমতো কেঁপে উঠেছে দেশ। দিকে দিকে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে। বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে সকলকে কাজে যোগ দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
কাজে যোগ দেওয়ার আবেদনে ‘না’ চিকিৎসকদের
চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজে যোগদানের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন। জুনিয়র ডক্টরস ফোরামের এক সদস্য জানান, আরজি কর হাসপাতালের মৃতার ন্যায়বিচারের মতো দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন না। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডাঃ সন্দীপ ঘোষকে স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে সাসপেন্ড করা এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। গতকাল বুধবার চিকিৎসকদের মঞ্চ কলকাতার উত্তরাঞ্চলের শ্যামবাজার এলাকায় তাদের দাবিতে মিছিল বের করে। জুনিয়র ডাক্তাররা স্পষ্ট বলেছেন, ‘একদল নবান্ন চাইছে। নবান্ন একদলকে চাইছে। আমরা দুটো দলের কোনও দলেরই নয়। আমরা জাস্টিস চাইছি।’
বিশেষ আর্জি মমতার
দিল্লিতে ইতিমধ্যে কাজে না ফেরার জন্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে খবর। এদিকে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আর্জি জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টও। কিন্তু নিজেদের দাবিতে অনড় চিকিৎসকরা। এদিকে বুধবার তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চিকিৎসকরা যখন তাঁদের সহকর্মীর জন্য ন্যায়বিচার চাইছেন, তখন থেকেই আমি তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল থেকেছি। ঘটনার এত দিন পেরিয়ে গেলেও আমরা তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিইনি। আমরা আপনাদের কষ্ট বুঝি। তবে রোগীরা যেহেতু কষ্ট পাচ্ছেন তাই দয়া করে এখনই কাজে ফিরে আসুন।”