কলকাতাঃ ভারতের বিখ্যাত শিল্পপতি রতন টাটার (Ratan Tata) মৃত্যুতে শোকাহত দেশ। এদিকে তাঁর মৃত্যুর পর একজনকে নিয়ে ব্যাপক মাতামাতি হচ্ছে। আর তিনি হলেন নোয়েল টাটা (Noel Tata)। টাটা ট্রাস্টের বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে টাটা গ্ৰুপ বোর্ড নিযুক্ত করেছে। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না যে এই নোয়েল টাটা হলেন রতন টাটার আবার সৎ ভাই। শুধু তাই নয়, তিনি আবার ভারতের নাগরিকও নন।
এমনিতে রতন টাটা টাটা ট্রাস্ট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। টাটা গোষ্ঠীর হোল্ডিং সংস্থা টাটা সন্সের ৬৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে টাটা ট্রাস্টের হাতে। টাটা গ্রুপ টাটা ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত হয়। এই ট্রাস্ট জনহিতকর কাজের তদারকি করে। নোয়েল টাটা এবং রতন টাটা দুজনেই প্রয়াত নাভাল টাটার পুত্র। যদিও পারিবারিক ইতিহাসের দিকে তাকালে জানা যায়, রতন টাটা ছিলেন নাভাল টাটার প্রথম স্ত্রী সুনি কমিসারিয়েটের পুত্র, অন্যদিকে নোয়েল টাটা ছিলেন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী সুইস ব্যবসায়ী সিমোন টাটার ছেলে।
ভারতের নাগরিক নন নোয়েল টাটা
জানলে অবাক হবেন, এতকিছুর পরেও কিন্তু নোয়েল টাটা ভারতের নাগরিক নন। শুনে চমকে গেলেন তো? কিন্তু এটাই সত্যি। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন যে তাহলে প্রয়াত রতন টাটার সৎ ভাই কোন দেশের নাগরিক? জানা গিয়েছে, নোয়েল টাটার আয়ারল্যান্ডের নাগরিকত্ব রয়েছে। তবে নোয়েল মূলত ভারতে কাজ করেন। এই নোয়েল টাটা আবার টাটা গ্ৰুপের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ভালো ব্যবসা হওয়ার পেছনে কিন্তু তাঁর অবদান কিছু কম নয়।
নোয়েল টাটা গ্রুপের খুচরো শাখা ট্রেন্টের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি টাটা ইন্টারন্যাশনাল এবং অন্যান্য টাটা ভেঞ্চারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। টাটা ইন্টারন্যাশনালে যোগ দেওয়ার আগে তিনি যুক্তরাজ্যের নেসলেতে কাজ করেছেন। নোয়েলকে একক স্টোর থেকে ভারত জুড়ে ৭০০ টিরও বেশি আউটলেট সহ একটি চেইনে রূপান্তরিত করার কৃতিত্ব দেওয়া হয়। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ও ট্রেন্ট লিমিটেডের দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটেছিল আর কোম্পানি ভালো আয় করেছিল।
সাসেক্স থেকে স্নাতক হন নোয়েল টাটা
নোয়েল ১৯৫৭ সালে মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রাথমিক পড়াশোনা মুম্বাইয়ে হয়েছিল। এরপর গ্র্যাজুয়েশন করতে ইংল্যান্ডে যান তিনি। সেখানকার সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পরে, নোয়েল টাটা ফ্রান্সের ইনসিড বিজনেস স্কুল থেকে একটি আন্তর্জাতিক একজেকিউটিভ প্রোগ্রামও করেছিলেন। নোয়েল টাটা শাপুরজি পালোনজি গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান পালোনজি মিস্ত্রির মেয়ে আলু মিস্ত্রিকে বিয়ে করেছেন।
উল্লেখ্য, এই শাপুরজি পালোনজি টাটা গ্রুপের একজন উল্লেখযোগ্য শেয়ারহোল্ডার ছিলেন। ২০১১ সালে নোয়েল টাটার শ্যালক সাইরাস মিস্ত্রিকে রতন টাটার উত্তরসূরি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ২০১৬ সালে সাইরাস মিস্ত্রিকে টাটা সন্সের কর্তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরে রতন টাটা ফেব্রুয়ারি ২০১৭ পর্যন্ত চার মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে কোম্পানির দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। এরপর নটরাজন চন্দ্রশেখরনকে টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান করা হয়। বর্তমানেও তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন।