প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পুজোর আগেই নবান্নের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল যে দুর্গাপুজোর আগেই পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা (Taruner Swapna Scheme 2024) দেওয়া হবে। প্রায় ১৬ লক্ষ পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এর জন্য মোট ১৩৩ কোটি ৫৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে সরকারের অর্থ বাজেটে। কিন্তু অনেকের অ্যাকাউন্টে টাকা না পৌঁছনো নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ বৃত্তিমূলক শিক্ষার্থীরা। আর এই আবহে এবার উঠে এক এক ভয়ংকর তথ্য। ট্যাব কেনার টাকায় এবার নজর পড়ল হ্যাকারদের। ৭০ ছাত্রছাত্রীর টাকা হাতিয়ে নিল সাইবার প্রতারকরা। প্রায় ৭ লক্ষ টাকার ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার।
বাংলার শিক্ষা পোর্টাল হ্যাক প্রতারকদের!
জানা গিয়েছে, বাংলার শিক্ষা পোর্টাল হ্যাক করে পূর্ব মেদিনীপুরের ছাত্রছাত্রীদের অ্যাকাউন্ট নম্বর সরিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্ট নম্বর বসিয়েছে সাইবার প্রতারকরা। গত ৪ অক্টোবর রাজ্য সরকার টাকা দেওয়া মাত্রই প্রায় ৭ লক্ষ টাকা প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে মোট ৭৮ হাজার ছাত্রছাত্রীকে ট্যাবের টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, চারটি স্কুলের ৭০ জন পড়ুয়া ওই টাকা পায়নি। অথচ তাদের স্কুলের তরফে বলা হচ্ছে, টাকা চলে গিয়েছে সকলের অ্যাকাউন্টে। আর তাতেই খটকা বাঁধে। এর পরেই বিষয়টি জানাজানি হয়। দেখা যায়, তাদের বদলে প্রতারকদের বদলে দেওয়া অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে গিয়েছে। এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে।
কী বলছেন শিক্ষামন্ত্রী?
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভাশিস মিত্র জানিয়েছেন, ‘মোট চারটি স্কুলে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী অনুদানের টাকা পায়নি। ঘটনাটি রাজ্যের নজরে আনা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’ এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, ‘কয়েকজন বহিরাগতর অ্যাকাউন্ট নম্বর তালিকায় ঢোকানো হয়েছে ট্যাব কেনার টাকা। সেগুলো ইতিমধ্যেই ব্লক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’ এই চারটি স্কুলের মধ্যে একটি হল চণ্ডীপুর থানার দিবাকরপুর হাইস্কুল। এখানকার ১১ জন পড়ুয়ার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকরা। বাংলার শিক্ষা পোর্টালে ওই ১১ ছাত্রছাত্রীর জায়গায় অন্য নাম ও অ্যাকাউন্ট নম্বর রয়েছে। প্রশ্ন উঠছে সরকারি পোর্টালে এত সিকিউরিটি থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এমনটা হয়।
যে সকল স্কুলে এমন ঘটনা ঘটেছে সেই স্কুলে এই কাজের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের দাবি, তাঁদের পক্ষে আগে থেকে পোর্টালে ঢুকে, সকলের নাম ও অ্যাকাউন্ট নম্বর মিলিয়ে দেখা সম্ভব ছিল না। এদিকে ট্যাবের টাকা না পেয়ে আতান্তরে পড়েছেন পড়ুয়ারা। বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে বিভিন্ন স্কুলে স্কুলে।