প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে যেন জট কিছুতেই কাটতে চাইছে না। কিছুদিন আগে SSC-র তরফ থেকে ছয় দফায় কয়েকশো চাকরিপ্রার্থীর হাতে অনুমোদন পত্র দেওয়া হয়েছিল। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা রয়েছে যে ‘গ্র্যাড উইথ বি.এড’ কিন্তু সমস্যা সেখানেই। কারণ প্রার্থীরা যখন এই অনুমোদনপত্র নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে, তখন সেখানে তথ্য ভেরিফিকেশন এর সময় দেখা যাচ্ছে, কারও রয়েছে ডিএলএড, এক বছরের বি.এড, আবার কারও রয়েছে চার বছরের বিএ/বিএসসি-এড। এদিকে স্কুলগুলির কাছে এ নিয়ে স্পষ্ট কোনও নির্দেশ না থাকায় নিয়োগপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষকতা নিয়ে বড় উদ্যোগ নিল SSC
স্কুল পরিচালন সমিতি বা প্রধান শিক্ষকদের বক্তব্য, সরকারি নির্দেশ যা থাকবে, সেই অনুযায়ী স্কুলগুলি ভেরিফিকেশন করবে। কিন্তু বিগত বছরে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন কারণে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বা পরিচালন সমিতির সদস্যদের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফ থেকে ডাকা হলেও সেখানে উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষকতা করতে গেলে শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্তাবলি কী কী হওয়া উচিত সেই নিয়ে কোনো রকম কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। এবার সেই বিষয়ে সমাধানে পথ বলে দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন বা SSC। পাশাপাশি উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষকতা করতে গেলে শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্তাবলি কী হওয়া উচিত, তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করেছে তারা।
কী বলছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান?
সূত্রের খবর, বিজ্ঞপ্তিতে চাকরির নিয়োগপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে SSC আট দফা শর্ত উল্লেখ করেছে। এবং নয়া বিজ্ঞপ্তিতে কমিশনের তরফ থেকে ‘গ্র্যাড উইথ বি.এড’ এর বদলে ‘গ্র্যাড উইথ প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশন’ উল্লেখ করা হয়েছে। যা থাকলে চাকরির নিয়োগপত্র পেতে কোনও অসুবিধা হবে না। অর্থাৎ বিএড এর পাশাপাশি আরও কিছু প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশন থাকলে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক হওয়া যাবে বলে স্পষ্ট জানানো হল। এই প্রসঙ্গে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, বেশ কয়েক মাস যাবৎ যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পর নানা সমস্যা হচ্ছিল। তাই যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তাই কী কী অ্যাকাডেমিক এবং প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশন প্রয়োজন, কমিশনের তরফ থেকে তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল এই বিষয়ে বলেন, “স্কুল সার্ভিস কমিশন অনুমোদনপত্র দেওয়ার সময়ে ভুল করে সবার ক্ষেত্রে একই কোয়ালিফিকেশন লিখেছিলেন। ফলে অনেকে চাকরিতে যোগ দিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই ভুল না করলে পদপ্রার্থীদের এত হয়রানি হতে হতো না। এই উদ্যোগ অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল।” প্রসঙ্গত আগামী ১১ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত, শনি ও রবিবার বাদ দিয়ে প্রত্যেক দিন কাউন্সেলিং চলবে।