শ্বেতা মিত্র, উত্তর দিনাজপুরঃ ২০২৪ সাল শেষ হতে চলেছে। কিন্তু তার আগেই সকলেই অধীর আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (Pradhan Mantri Awas Yojana) টাকার জন্য। বিশেষ করে বাংলার এমন বহু মানুষ রয়েছেন যারা এই আবাস যোজনায় আবেদন করেছিলেন এবং টাকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন, যেমন সীমান্তবর্তী এলাকার ফুলবাড়ি গ্রামের মানুষজন। তারাও চেয়েছিলেন যে মাথার ওপর একটা ভালো পাকা ছাদ হোক, সেজন্য আবেদন করেছিলেন এই বিশেষ যোজনায়। কিন্তু তাদের সঙ্গে যে এমন ভয়ানক কিছু ঘটে যাবে সেটার জন্য হয়তো কেউ প্রস্তুত ছিলেন না। আস্ত গোটা গ্রামই যে এই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা তালিকা থেকে বাদ পড়ে গিয়েছে। হ্যাঁ শুনতে অবাক লাগলেও এটাই দিনের আলোর মতো সত্যি। সব থেকে বড় কথা, কেন এই আবাস যোজনা তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ল সরকারের সেই যুক্তি শুনে চমকে গিয়েছেন সকলেই। আরো বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর।
আবাস যোজনার তালিকা থেকে বাদ গেল আস্ত গ্রাম
আজ কথা হচ্ছে উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপোখরের ফুলবাড়ি গ্রাম নিয়ে। এই গ্রামটি একদম ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা। একটু গেলেই নাকি বাংলাদেশ চলে যাওয়া যায় অনায়াসেই। আর এটাই যেন সকলের কলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে ফুলবাড়ি গ্রামের মানুষজন ভাবতে পারেনি যে আবাস যোজনা টাকা তাঁরা পাবেন না। সব থেকে বড় কথা তালিকায় নাম উঠেও গিয়েছিল এই গ্রামের প্রত্যেকটি মানুষের। তবে সমীক্ষা চালানোর পর সকলের নাম সেই তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর। স্বাভাবিকভাবে এই খবর চাউর হতেই আকাশ থেকে পড়েছেন সকলে।
কেন নাম বাদ পড়ল মানুষের?
স্বাভাবিক প্রশ্ন উঠছে আচমকা কেন এই আবাস যোজনা তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ল গ্রামের মানুষের? প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী, সীমান্ত এলাকায় বেড়ার ও-পারে পাকা নির্মাণ করার ক্ষেত্রে বিএসএফের নিষেধজ্ঞা রয়েছে। তাই সমীক্ষায় গোটা গ্রামের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ১৮০ মিটার ঢালাই রাস্তা হয়েছে গ্রামে। তবে এখনো পাকা বাড়ি পায়নি এই গ্রামের মানুষ।
মাটি বা পাটকাটির দেওয়াল ও টিনের ছাদ দেওয়া বাড়িগুলোতে ১০০ পরিবারের বাস। কৃষিকাজ করেই চলেই দিন। এই গ্রামে বাজার-হাট, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এমনকি, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র সবই রয়েছে। , স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘আমরা আশায় ছিলাম ঘর পাব। কিন্ত তালিকায় নাম নেই। ব্লক অফিসে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, আমরা বেড়ার ও-পারে রয়েছি তাই আমাদের ঘর মিলবে না।’ এদিকে বিডিও কৌশিক মল্লিক বলেন, ‘বেড়ার ও-পারে স্থায়ী নির্মাণে বিএসএফের ‘নিষেধাজ্ঞা’ আছে। তাই ফুলবাড়ির বাসিন্দাদের আবাসের আবেদনপত্র মঞ্জুর করা হয়নি।’ এখন আগামী দিনে কী হয়? গ্রামের বাসিন্দারা আদৌ মাথার ওপর পাখা ছাদ পান কিনা সেদিকে নজর থাকবে সকলের।