প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: তৃণমূলে বরাবর অভিষেকপন্থী হিসেবেই পরিচিত সাংসদ কুণাল ঘোষ। তাঁর মুখে অনেকবারই উঠে এসেছে যে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী পদে বসবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। যদিও পরে তা নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি শিল্পীদের বয়কট বিতর্ক অভিষেক এবং কুণালকে দুইটি ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করছেন।
শিল্পী বয়কটে বিস্ফোরক মন্তব্য অভিষেকের!
জানা গিয়েছে শিল্পীদের বয়কটের যে ডাক দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ, গতকাল তা সরাসরি খারিজই করে দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল অর্থাৎ বুধবার ফলতা থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে, “ছোটবেলা থেকে আমি যতটুকু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিনি, তিনি কখনই বয়কট করে দেওয়া, ভেঙে দেওয়া, গুঁড়িয়ে দেওয়া, সরিয়ে দেওয়া, হঠিয়ে দেওয়া, এই রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না। যদি করতেন, তা হলে এক সময়ে যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন, তাঁরা দলে ফিরতে পারতেন না।” আর এই মন্তব্যেই ফের বিতর্কের সুর চড়ে দলের অন্দরে। অনেকের ধারণা অভিষেকের এই মন্তব্য আসলে কুণাল ঘোষকেই উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে।
পাল্টা মন্তব্য কুণালের
তবে এবার অভিষেকের সেই মন্তব্যের ভিত্তিতে পাল্টা মন্তব্য করলেন কুণাল ঘোষ। গতকালই সন্ধেবেলায় তিনি এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সর্বোচ্চ নেত্রী। এই বিষয়ে তিনি যা বলবেন সবটা মাথা পেতে নেব। এখনও পর্যন্ত তাঁর কাছ থেকে এই বিষয়ে কোনও কথা শুনিনি ফলে তিনি কী ভাবছেন, সেটা নিশ্চয়ই আর এক জনের মুখ থেকে শুনব না।’ সাংবাদিকদের তরফে কুণালকে প্রশ্ন করা হয় যে অভিষেক নাম না করে কুণালকেই খোঁচা দিলেন কি তাতে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন আমি মনে করি না অভিষেক আমাকে ইঙ্গিত করে কিছু বলেছেন।”
দলে নিজের অবস্থান নিয়ে স্পষ্ট কুণাল
এদিন কুণাল ঘোষ দলে নিজের অবস্থান নিয়েও জানান যে, “তৃণমূলের প্রতি অবদানগুলি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানেন, এবং অভিষেকও জানেন। ২০১১ সালের ব্রিগেডে আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলাম এবং সেটা আমার মুখ দিয়েই করিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তী কালে দলের একাংশ কারা কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে কি কি চক্রান্ত করেছিল, সবটা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানেন।”
আরও পড়ুনঃ DA বৃদ্ধির আগেই কপাল খুলল সরকারি কর্মীদের, গ্র্যাচুইটির ঊর্ধ্বসীমা বেড়ে হল ২৫ লক্ষ টাকা
পাশাপাশি এদিন কুণাল ঘোষ বলেন, “অভিষেক ঠিকই বলেছেন। তৃণমূল কংগ্রেস কখনই বয়কটের রাজনীতি করে না। কিন্তু আরজি কর ইস্যুতে যে শিল্পীরা মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সম্পর্কে কুৎসা ছড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন, বাংলার তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা তাঁদের কোনও অনুষ্ঠানে ডাকবেন না। কিন্তু এর সঙ্গে গোটা বাংলার সব শ্রেণির শিল্পীকে বয়কটের কোনও সম্পর্ক নেই।” যদিও এর আগে কুণাল ঘোষ শিল্পীদের বয়কটের ডাক দিলে, অভিষেক চরম বিরোধিতা করেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ ৬০০০ কোটি টাকার প্রতারণা! একযোগে বেহালা ও হাওড়ায় হানা ED-র, নজরে প্রভাবশালী
এমনকি আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশংসার চোখে দেখেছিলেন। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে, “আমরা সকলেই স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। আমি তো বলেছি, ১৪ অগাস্ট রাতে যাঁরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন, রাত দখলের ডাক যাঁরা দিয়েছিলেন, তাঁদের কেউ সমর্থন করুক বা না করুক, আমি সাধুবাদ জানিয়েছি। সেটা কারও ভাল লাগতে পারে, কারও না লাগতে পারে, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে এটাই বাংলার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের পার্থক্য।”
ভারত নয়, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিততে পারে এই দুই দল! হয়ে গেল ভবিষ্যদ্বাণী