প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২০২২ সালের জুলাই মাসে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Recruitment Scam) কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED র হাতে গ্রেফতার হয়েছিল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু তিনি নন, জেল হয়েছিল পার্থের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য সহ আরও অনেকে। কিন্তু একে একে সকলের জামিন হলেও পার্থ প্রভাবশালীনেতা হওয়ায় আদালতে বারবার খারিজ হয়েছে তাঁর জামিনের আবেদন। এমনকি শীর্ষ আদালতেও সেই কারণেই তৈরি হয়েছিল জটিলতা। অবশেষে গত ১৩ ডিসেম্বর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর হলেও শীর্ষ আদালতের তরফে দেওয়া হয় একাধিক শর্ত।
চার্জ গঠনের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
শীর্ষ আদালত তথা সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পার্থ জামিন পাবেন। তাই সেই কারণে শীতকালীন ছুটি অর্থাৎ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চার্জ গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ED কে। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে এই মামলার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের বয়ান নেওয়ার চেষ্টা করবে ট্রায়াল কোর্ট। যে সমস্ত সাক্ষীদের প্রভাবিত করার আশঙ্কা রয়েছে, তাঁদের বয়ান রেকর্ড করতে হবে। সমস্ত তথ্য জোগাড়ের পর কার্যকর হবে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জামিনের নির্দেশ। ১ ফেব্রুয়ারির আগে যদি চার্জ গঠন এবং সাক্ষীদের বয়ান গ্রহণ হয়ে যায়, তবে তার আগেও জামিন পেতে পারেন পার্থ।
অবশেষে জামিন পার্থের
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনেই এরপরই চার্জগঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ED। শুরু হয় একের পর এক সাক্ষীদের বয়ান রেকর্ড। গতকাল অর্থাৎ সোমবার, শীর্ষ আদালতের নির্দেশের ১ মাস ৭ দিনের মাথায় কলকাতার বিচারভবনে বিচারক শুভেন্দু সাহার এজলাসে জামিন পেলেন পার্থ। তবে জামিন পেলেও এখনই জেলমুক্তি হবে না পার্থের। কারণ, এই জামিন ইডির মামলার পরিপ্রেক্ষিতে। এখনও নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে CBI এর মামলায় শুরু হয়েছে বিচারপ্রক্রিয়া।
অসুস্থ পার্থ
গতকাল বিচারক জামিনের এই মামলায় শর্ত দিয়েছিল যে, জামিন পেলেও এখনই শহর ছাড়তে পারবেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিকে গতকাল অর্থাৎ সোমবার জামিন পাওয়ার পরেই জেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পার্থ। সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্সি জেলে অসুস্থবোধ করায় চিকিৎসার জন্য তাঁকে SSKM হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানেই ভর্তি করানো হয়েছে পার্থকে। এদিকে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে জামিন পেলেও আর কোনোদিনও মন্ত্রী হতে পারবেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে বিধায়ক পদের দায়িত্ব সামলাতে পারবেন।