প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সপ্তাহান্তে ছুটি কাটাতে সকলেই কম বেশি ২ দিনের জন্য প্রিয় সমুদ্রসৈকত দিঘায় (Digha) চলে আসে। এক অন্যতম এবং বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় পর্যটনস্থল হল এই দিঘা। যার ফলে বেশ জাঁকিয়ে বসেছে সেখানকার পর্যটন শিল্প। আর এই আবহে একাধিক হোটেল খুলেছে রমরমিয়ে। কিন্তু সমস্যা একটাই থাকা শোওয়ার জায়গা ঠিক থাকলেও খাবারের মান অত্যন্ত খারাপ বলে দাবি করছে পর্যটকরা।
বেশ কয়েকদিন ধরেই জানা গিয়েছে দিঘার বিভিন্ন হোটেল এবং রেস্তরাঁয় মাঝেমধ্যেই খুবই নিম্ন মানের খাবার বিক্রির অভিযোগ উঠে আসছে। এমনকি এও ঘটনা শোনা গিয়েছে যে সেখানকার খাবার খেয়ে নানা রকম অসুস্থতার মুখোমুখি হয়েছে পর্যটকেরা। তাই এবার সমুদ্রসৈকত এলাকার দোকানগুলিতে খাবারের মান যাচাই করতে দফায় দফায় অভিযান চালানো শুরু করল খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা।
হোটেলগুলোতে হানা খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা!
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ২৫টি হোটেলে গিয়েছেন খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা। কয়েকটি হোটেলের রান্নাঘরের পরিবেশ এতটাই ভয়ংকর এবং দুর্গন্ধযুক্ত যে বাধ্য হয়ে নাকে রুমাল চাপা দিতে হয়েছে। এছাড়াও সমীক্ষায় মোট ১৩ টি হোটেলে বাসি, পচা খাবার রাখারও অভিযোগও উঠেছে। অবাক করা বিষয় হল এই ১৩ টি হোটেলই বেশ জনপ্রিয় এবং ঝাঁ চকচকে। কিন্তু রান্নাঘরে মাছি ভনভনে, নোংরা পরিবেশ দেখে হতবাক আধিকারিকরা। তাই শীঘ্রই এবার রান্নাঘরের পরিবেশ বদলাতে বলা হয়েছে।
হোটেল মালিকদের সতর্কবার্তা
তল্লাশির সময় খাদ্য দফতরের কর্মীরা দেখেন বেশিরভাগ হোটেলগুলোর রান্নাঘরে এবং অন্যান্য সংরক্ষণস্থলে তল্লাশি চালিয়ে বাসি এবং পচা খাবারের বিশাল মজুদ করা আছে। বিশেষ করে বেশ কয়েকদিনের রান্না করা মাছের ঝোল, তড়কা, বিরিয়ানি। খাবারের পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে, সেগুলো পুনরায় গরম করে পর্যটকদের পরিবেশন করার পরিকল্পনা ছিল হোটেল মালিকদের। আবার কয়েক জায়গায় দেখা গিয়েছে রান্না করা খাবারে রং এবং নোংরা জল ব্যবহার করা হচ্ছে। তা দেখে বেশ ক্ষিপ্ত আধিকারিকরা। তাই সকলের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। এবং বলা হয় এর পরেও যদি তাঁরা নিজেদের কাজ না শোধরান তাহলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুনঃ পুরনো না নতুন, কোন পাঠ্যক্রমে উচ্চ মাধ্যমিক দেবে টেস্টে অনুত্তীর্ণেরা? যা বলল WBCHSE
এই প্রসঙ্গে জেলা খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিক বিশ্বজিৎ মান্না জানিয়েছেন নিয়মিত ভাবে পর্যটনস্থলগুলির হোটেলগুলিতে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অভিযান শুরু করা হচ্ছে। আর সেখানেই দেখা যাচ্ছে বহু হোটেলের রান্না করা খাবার পরিবেশনের পর্যাপ্ত অনুমোদন নেই। কয়েকটি হোটেলে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে যাতে তাঁরা এক সপ্তাহের মধ্যে উপযুক্ত লাইসেন্স নিয়ে নেয় এবং বাসি খাবার মজুত বন্ধ রাখে। এছাড়াও তিনি আরও বলেন, অভিযোগ আসছে যে বেশ কয়েকটি হোটেলে নাকি মাছে ফর্মালিনের মতো বিষাক্ত রাসায়নিক দেওয়া হচ্ছে। তাই গোটা টিম এবার বিভিন্ন হোটেলে রাখা কাঁচা মাছের নমুনা সংগ্রহ করছে। যদি পরীক্ষায় এই অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।