প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক জনস্বার্থ প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম প্রকল্প হল প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা প্রকল্প। আসলে দেশের গরিব এবং সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেই এবং খাদ্যশস্যের সহজলভ্যতা, ক্রয়ক্ষমতা ও প্রাপ্যতার পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই প্রকল্প রূপায়িত হয়েছিল। কিন্তু সমস্যা হল এই প্রকল্পের আওতায় থাকা রেশন গ্রাহকদের জন্য চাল উৎপাদন রাজ্য সরকারকে ব্যাপক অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। তার অন্যতম সমস্যা হল অতিরিক্ত আর্থিক দায় ( Expenditure On Rice Production Increasing in WB)।
সেন্ট্রাল পুলের খরচে দিশেহারা রাজ্য সরকার
২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা প্রকল্প চালু হয়। আসলে করোনা মহামারির সময় বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় খাদ্য যোগানে বেশ ঘাটতি দেখা গিয়েছিল। আর তখনই কেন্দ্রীয় সরকার এই জনদরদী প্রকল্পের সূচনা করে। তবে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা প্রকল্প কেন্দ্রীয় প্রকল্প হলেও চাল উৎপাদন করতে অতিরিক্ত আর্থিক দায় নিতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। খাদ্যদপ্তর এর শেষ আপডেট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, চলতি বছরে রাজ্যের অতিরিক্ত চাল উৎপাদনে খরচ বেড়েছে ৮৪ কোটি টাকা। রাজ্য সরকার চাষিদের কাছ থেকে সরকারি উদ্যোগে নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান কেনা হয়। এবং সেই ধান থেকে যে চাল উৎপাদন করা হয় তার একটা বড় অংশ জমা পড়ে ‘সেন্ট্রাল পুলে’।
মিলিং খরচের খাতে রাজ্য সরকারের ব্যাপক বৃদ্ধি
জানা গিয়েছে এই সেন্ট্রাল পুল থেকেই প্রধানমন্ত্রী অন্ন যোজনার আওতায় থাকা রেশন গ্রাহক ছাড়াও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, স্কুলের মিড ডে মিল প্রকল্পের জন্য চাল সরবারহ করা হয়। কিন্তু সেই সেন্ট্রাল পুলেই খরচ বাড়ছে দিন কে দিন। এদিকে খাদ্যদপ্তর সূত্রে বলা হচ্ছে, সেন্ট্রাল পুলের চালের জন্য যে খরচ হয় তার পুরো দায় কেন্দ্রের নেওয়ার কথা। কিন্তু উল্টে রাজ্য সরকারকে সেই খরচ নিজে বহন করে চলেছে। মিলিং খরচের রেকর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে চলতি খরিফ মরশুমে রাইস মিলে প্রতি কুইন্টাল চাল উৎপাদনের জন্য ‘মিলিং’ খরচ ১০ টাকা বেড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ আগে যেখানে ৩০ টাকা ছিল সেটি এখন বেড়ে হয়েছে ৪০ টাকা। আগে যেমন কেন্দ্রীয় সরকার ২০ টাকা দিত এবং রাজ্য দিত ১০ টাকা। এখন রাজ্যকে আরও ১০ টাকা দিয়ে মোট ২০ টাকা দিতে হয়। কেন্দ্রের প্রকল্প হলেও রাজ্যকেও সমান টাকা দিতে হয়।
মান্ডি খরচের বৃদ্ধিতেও মাথায় হাত সরকারের
দিনের পর দিন এই খরচের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে রাজ্যের খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ কোটিতে। অন্যদিকে আবার রাইস মিলে ‘মান্ডি’ খরচ কুইন্টাল প্রতি ১২ টাকা থেকে বেড়ে ১৪ টাকা করা হয়েছে। এই খাতে আগে কেন্দ্র ১০ টাকা ও রাজ্য সরকার ২ টাকা করে দিত। এখন রাজ্যকে আরও ২ টাকা করে দিতে হচ্ছে। যার ফলে রাইস মিলে ‘মান্ডি’ খরচ খাতে বছরে রাজ্যের খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি টাকা। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাইস মিল মালিকদের সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মালেক অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তারপরই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বরাদ্দ বৃদ্ধি পায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে পাঞ্জাবসহ কয়েকটি রাজ্যে কুইন্টালে ২৯ টাকা দেওয়া হয়। সেখানে এই রাজ্যের জন্য কেন্দ্র দেয় মাত্র ১০ টাকা। সেন্ট্রাল পুলের চালের জন্য বস্তার খরচও রাজ্য সরকার বহন করে। এর জন্য রাজ্যের প্রচুর টাকা খরচ হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুনঃ কেনার সঠিক সময়, মধ্যবিত্তের মুখে হাসি ফুটিয়ে ফের পতন সোনার দামে! কত হল রুপো?
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |