বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: রাজ্য তথা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে মূলত শাখা তৈরি করা যায়নি, সেই সব জায়গায় CSP বা কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট (Bank CSP) অথবা মিনি ব্রাঞ্চ বানিয়ে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পরিচালনা করে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি।
এতে গ্রাম বা মফস্বলে বসবাসকারী মানুষজন যেমন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পেতে পারেন ঠিক তেমনই CSP খুলে মাসে হাজার হাজার টাকা রোজগারের সুযোগ রয়েছে এজেন্টদেরও। হ্যাঁ, একজন ভারতীয় নাগরিক চাইলেই যেকোনও ব্যাঙ্কের CSP বা মিনি ব্রাঞ্চ খুলে মাসে মোটা টাকা আয় করতে পারেন। কীভাবে হবে সব? কোথায় আবেদন করবেন? দেখে নিন।
CSP আসলে কী?
CSP-র পুরো নাম Customer Service Point। এই ধরনের মিনি ব্রাঞ্চ মূলত গ্রাম বা মফস্বলের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে তৈরি করা হয় যেখানে সাধারণত ব্যাঙ্কের কোনও শাখা নেই। এই ধরনের মিনি ব্রাঞ্চ তৈরির একমাত্র উদ্দেশ্য, গ্রামের মানুষজন যাতে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন এবং ব্যাঙ্ক যাতে তাদের ব্যাঙ্কিং পরিষেবাকে আরও দীর্ঘায়িত করতে পারে।
CSP থেকে কি আদৌ আয় করা সম্ভব?
জানিয়ে রাখি, ভারতে এমন একাধিক ব্যাঙ্ক রয়েছে যারা CSP বা মিনি ব্রাঞ্চের মাধ্যমে প্রতিদিন কয়েকশো কোটি টাকা আয় করছে। সেই সাথেই আয় হচ্ছে CSP এজেন্টদেরও। বলা বাহুল্য, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা অন্য কোনও ব্যাঙ্কের কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট তৈরি করে মূলত কমিশনের মাধ্যমে আয় করতে পারেন এজেন্টরা। এর জন্য ওই এজেন্টকে ব্যাঙ্কের হয়ে কাজ করতে হয়। আসলে যে CSP বা মিনি শাখায় যত বেশি গ্রাহক হবে সেই CSP এজেন্ট কমিশনের ভিত্তিতে তত বেশি অর্থ রোজগার করতে পারবেন।
পশ্চিমবঙ্গে কোন কোন ব্যাঙ্ক CSP পরিষেবা দিচ্ছে?
ভারতের একাধিক ব্যাঙ্ক বর্তমানে গ্রাম বা মফস্বলে কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট পরিষেবা চালু রেখেছে। সেই সূত্রে বলি, বর্তমানে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ বড়দা (BOB), কানাড়া ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ইউকো ব্যাঙ্ক, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া সহ ICICI, HDFC ও Axis Bank-এর মতো বহু প্রাইভেট ব্যাঙ্কও CSP পরিষেবা চালু রেখেছে।
CSP খুলতে জন্য কী কী যোগ্যতা প্রয়োজন?
পশ্চিমবঙ্গের যেকোনও নাগরিক CSP খোলার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে আবেদন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আবেদনকারীর ন্যূনতম বয়স হতে হবে 18 বছর, সেই সাথে শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে মাধ্যমিক পাস হতেই হবে। এছাড়াও বেসিক কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের প্রতি নলেজ থাকা দরকার। জানিয়ে রাখি, ব্যাঙ্কে CSP-র জন্য আবেদন করার আগে আবেদনকারীর নিজস্ব বা ভাড়ার দোকান ঘর থাকা প্রয়োজন।
এগুলি ছাড়াও ডকুমেন্ট হিসেবে ভোটার কার্ড অথবা আধার কার্ড, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, প্যান কার্ড, পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট সঙ্গে রাখতে হবে। বলা বাহুল্য, যে জায়গায় CSP খোলার জন্য আবেদন করা হচ্ছে সেখানে অবশ্যই ভাল ইন্টারনেট কানেকশন অর্থাৎ WIFI থাকা বাধ্যতামূলক।
কোন কোন উপায়ে CSP থেকে আয় করা সম্ভব?
একজন এজেন্ট সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের CSP থেকে মূলত কমিশনের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে টাকা জমা বা উত্তোলনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কমিশন, নতুন অ্যাকাউন্ট ওপেনিংয়ে আলাদা কমিশন, বিমা বিক্রির কমিশন, লোন প্রসেসিং ফি-র মতো বিভিন্ন উপায়ে রোজগার করতে পারেন। এছাড়াও অন্যান্য উপায়ে রোজগারগুলির মধ্যে রয়েছে মোবাইল রিচার্জ, DTH ও ইলেকট্রিসিটি বিল পেমেন্ট, PAN কার্ড তৈরি ও AEPS অর্থাৎ আধার এনেবেলড পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে লেনদেনের মাধ্যমে আয় করা যায়।
অবশ্যই পড়ুন: বাংলায় বন্ধ হচ্ছে একাধিক পোস্ট অফিস! তালিকায় আপনার এলাকার ব্রাঞ্চ? দেখুন লিস্ট
CSP থেকে কত টাকা আয় করা যাবে?
সাধারণত CSP থেকে মাসিক রোজগার নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কের ওপর নির্ভর করে। তবে একজন এজেন্ট যদি সঠিকভাবে মিনি শাখা বা তাঁর CSP পরিচালনা করতে পারেন সে ক্ষেত্রে কমপক্ষে মাসে 15,000 থেকে 30,000 টাকা আয় করা যায়। উল্লেখ্য, কোনও ব্যাঙ্কের কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট যদি রমরমিয়ে নিয়ে চলে সেক্ষেত্রে গ্রাহকের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে মাসে 40 হাজার টাকা রোজগারেরও উদাহরণ রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |