সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (Ishwar Chandra Vidyasagar)…বাঙালিদের কাছে এই নামটাই যথেষ্ট। তিনি সকল বাঙালির কাছে এক গর্বের ব্যাপার। তিনি ছিলেন সমাজের কারিগর। তিনি জীবনে কী কী কাজ করেছেন তা কমবেশি ছোট থেকে আমরা সকলেই জেনে এসেছি। তবে আজকের এই প্রতিবেদনে বিদ্যাসাগরের সঙ্গে জড়িত এমন এক বিষয় নিয়ে আলোচনা করব যেটি সম্পর্কে জানলে আপনি আকাশ থেকে পড়বেন। আপনি কি জানেন যে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নামে আস্ত একটি রেলস্টেশন রয়েছে? তাও কিনা বাংলার বাইরে? বিশ্বাস হচ্ছে না তো? তাহলে বিশদে জানতে নজর রাখুন আজকের এই লেখাটির ওপর।
বাংলার বাইরে রয়েছে বিদ্যাসাগরের নামে রেলস্টেশন
বিদ্যাসাগরকে নিয়ে একটি গল্প কিন্তু বহুল প্রচলিত। আর সেটা হল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কলকাতা থেকে ট্রেনে করে এক সন্ধ্যায় ঝাড়খণ্ডের এক নির্জন স্টেশনে নামেন। তাঁর বেশভূষা ছিল খুবই সাধারণ। পরনে ধুতি, গায়ে মোটা চাদর আর পায়ে এক জোড়া চটি। এমন সময় ট্রেন থেকে নামলেন এক ডাক্তারবাবু। হাতে ছোট্ট ব্যাগ। স্টেশনে নেমে তিনি হাঁক পাড়তে লাগলেন ‘কুলি’ ‘কুলি’ বলে। এই ডাক শুনে ঈশ্বরচন্দ্র এগিয়ে গেলেন। কুলি ভেবে ডাক্তারবাবু তাঁর হাতে ব্যাগটি দিলেন। ঈশ্বরচন্দ্রও ব্যাগ নিয়ে গিয়ে বাবুকে পালকিতে তুলে দিলেন।
এরপর ডাক্তারবাবু পয়সা দিতে গেলে তিনি বললেন, ‘পয়সা দিতে হবে না। আমি ঠিক কুলি নই। এত ছোট ব্যাগ নিয়ে বিপদে পড়েছিলেন বলে আমি আপনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলাম। আমার নাম ঈশ্বরচন্দ্র, লোকে আমাকে বিদ্যাসাগর বলেই চেনে।’ শুনে চমকে গেলেন তো? আসলে যে স্টেশনে এই ঘটনাটি ঘটেছিল সেই রেলওয়ে স্টেশনটি বর্তমানে ঝাড়খণ্ড রাজ্যে অবস্থিত।
নিশ্চয়ই ভাবছেন স্টেশনের নাম কী ছিল? তাহলে জানিয়ে রাখি, স্টেশনটির নাম ছিল কারমাটাঁড়। বর্তমান সময়ে এই রেল স্টেশনের নাম বদল করে রাখা হয়েছে বিদ্যাসাগরের নামে। আসলে তাঁকে সম্মান জানাতেই সরকারের তরফে এই নাম রাখা হয়েছে। সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় কী জানেন, ঝাড়খণ্ডের এই স্টেশনের বোর্ডে জ্বলজ্বল করছে বাংলা লেখা। অর্থাৎ বাংলা হরফে লেখা আছে বিদ্যাসাগর। এছাড়াও রয়েছে হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষায়।