প্রীতি পোদ্দার, রাঁচি: দুই বছর আগে অর্থাৎ ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে, ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট একটি পিটিশনের শুনানির সময় আদেশ দিয়েছিল যে অন্যান্য রাজ্যের CTET বা TET পাস প্রার্থীরাও ঝাড়খন্ডে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য উপস্থিত হতে পারেন। তবে সেই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছে কিছু JTET উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। তাই হাইকোর্টের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হয়।
JTET উত্তীর্ণ প্রার্থীদের দাবি খাটল শীর্ষ আদালতে
মামলা করার সময় JTET উত্তীর্ণ প্রার্থীরা দাবি করেছিল যে, JTET তে আঞ্চলিক ভাষার পরীক্ষা হয়, যা অন্য টেট পরীক্ষায় হয় না। সেই সময় আদালতে মামলাকারীদের আইনজীবি গোপাল শঙ্কর নারায়ণ এবং অমৃতাংশ ভাটস যুক্তি দিয়েছিলেন যে ঝাড়খণ্ডের স্কুলগুলিতে শিশুদের তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। বাইরের রাজ্য থেকে শিক্ষকরা এলে তারা এই দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। আর এবার সেই যুক্তিই কাজে লাগল।
নেওয়া হল বড় সিদ্ধান্ত
জানা গিয়েছে, এর আগে গত বছর এপ্রিলে, সুপ্রিম কোর্ট ঝাড়খণ্ড সরকার এবং ঝাড়খণ্ড স্টাফ সিলেকশন কমিশনকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল যে অনুমতি ছাড়া নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা যাবে না। আর এবার নিয়োগ প্রসঙ্গে বড় সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এই প্রসঙ্গে জানিয়েছে যে ঝাড়খণ্ডের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানের জন্য খুব জরুরী আঞ্চলিক ভাষা যেমন সাঁওতালি, খোর্থা, নাগপুরি ইত্যাদি, যা শুধুমাত্র JTET পাস প্রার্থীদের আছে। তাই সেই অনুযায়ী এবার মামলাকারীদের পক্ষ নিল সুপ্রিম কোর্ট।
অবশেষে বিচারপতি জে কে মহেশ্বরী এবং বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের বেঞ্চ স্বীকার করেছেন যে অন্যান্য রাজ্যের CTET বা TET পাস প্রার্থীদের এই ভাষাগুলির জ্ঞানের অভাব শিশুদের শিক্ষার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই শিক্ষার অধিকার আইনের বিধানগুলি মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ঝাড়খণ্ড শিক্ষক যোগ্যতার পরীক্ষায় JTET প্রার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করতেই হবে।
CTET বা TET পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের বড় ধাক্কা
তবে সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত সকলের কাছে সুখবর হিসেবে ঠেকলেও অন্যান্য রাজ্য থেকে CTET বা TET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। কারণ সুপ্রিম কোর্ট এই ২৬ হাজার নিয়োগ প্রার্থীর মধ্যে CTET বা TET পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে স্পষ্ট যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে সেটি হল ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যে শিক্ষার ক্ষেত্রে স্থানীয় ভাষা ও সংস্কৃতিকে অবশ্যই প্রাধান্য দেওয়া উচিত।