প্রীতি পোদ্দার, সুরাট: আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশে কাপড়ের দারুণ চাহিদা রয়েছে। এককথায় বলা যায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক শিল্প হল বস্ত্র উৎপাদন। সারা দেশে বস্ত্র রপ্তানিতে বাংলাদেশ, ভারত ও চিনকে রীতিমতো টেক্কা দিয়ে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশের বস্ত্র রপ্তানির চিত্র অনেকটাই পরিবর্তন হল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরেই ওপার বাংলায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর অত্যাচার রীতিমত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। যার ফলে সে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
বস্ত্রশিল্পের বাজারে মহাবিপদে পড়েছে বাংলাদেশ
একেতেই বিদ্যুৎ এর বকেয়া বিল যেমনভাবে বাড়ছে ঠিক তেমনই আবার খাদ্য সামগ্রীর দাম হচ্ছে আকাশ ছোঁয়া। যার ফলে বেশ বিপাকে পড়েছে সেখানকার মানুষ। আর এই আবহেই মারাত্মকভাবে ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশের কাপড় ব্যবসা। দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত গার্মেন্ট শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর তার অন্যতম প্রধান কারণ হল সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এর ওপর অত্যাচার। বিশেষ করে হিন্দুদের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঘটনা বাড়ানোর ফলে উদ্বেগ আরও বেড়েছে, এবং অনেক প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ হওয়ার পথে। তবে সেক্ষেত্রে এবার বড় সুবিধা পেতে চলেছে ভারত।
আর্ন্তজাতিক ব্র্যান্ডের নজর এবার ভারতে
বরাবর বেশ কিছু বড় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড বাংলাদেশে পোশাক তৈরি বা সংগ্রহ করে থাকে। যেগুলি তৈরি করে বড় বড় শোরুমে বিক্রি করা হয়। তবে বর্তমানে বাংলাদেশের যা পরিস্থিতি তাতে এই ব্র্যান্ডগুলির ব্যবসা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয় পড়েছে। আর তাই আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলি ক্ষতি কমানোর জন্য এখন ভারতীয় উৎপাদকদের দিকে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। এমনিতেই, ভারত ২০১৮ সাল থেকেই ইউরোপ ও আমেরিকায় কাপড় রফতানির পরিমাণ বাড়িয়েছে। তাই সেক্ষেত্রে সেই পরিমাণ আরও বাড়তে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যের ২০- ২১ শতাংশ বাজার দখল করতে চলেছে ভারত।
ভারতের মধ্যে সুরাট বস্ত্র শিল্পের জন্য বরাবর বিখ্যাত। সিল্ক, কটন, সিন্থেটিক টেক্সটাইল তৈরি হয় এখানে। লাখ লাখ ভিন রাজ্য়ের শ্রমিক কাজ করেন এখানে। শিল্পের অভ্যন্তরীণ সূত্র অনুযায়ী, গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলো এখানে প্রস্তুত পোশাক উৎপাদন এবং সরবরাহ সম্পর্কে জানতে চাইছে। যদি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো ভারতের সঙ্গে কাজ করে, তাহলে কর্মসংস্থান বাড়ার পাশাপাশি বেকারত্বের পরিমাণ কমবে। তবে শুধুমাত্র সুরাট নয়, অন্যান্য ভারতীয় শহরগুলিকেও লাভবান করতে পারে, যেখানে বস্ত্র শিল্পের কেন্দ্র রয়েছে।