প্রীতি পোদ্দার: আইনের ভার কখনও কারোর কাছে যেমন বেশ ভারী হয় আবার তেমনই কারোর কাছে বেশ হালকা হয়। তবে আইন যে সবার কাছে সমান সেটা নিয়ে কোনো মতবিরোধ নেই। আর এই আবহেই এবার সুপ্রিম কোর্টের ‘লেডি অফ জাস্টিস’ এর মূর্তির বড় বদল নিয়ে আসল প্রধান বিচারপতি। আগের মূর্তি সরিয়ে এবার নতুন মূর্তিটি বসানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের লাইব্রেরিতে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
‘লেডি অফ জাস্টিস’ এর ভোল বদল
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের লাইব্রেরিতে এবার ন্যায়ের নতুন মূর্তিটি বসানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এর নির্দেশেই পুরনো মূর্তি সরিয়ে বসেছে নতুন মূর্তি। এর আগে ন্যায়ের প্রতিমূর্তি হিসাবে যে নারীমূর্তি প্রচলিত ছিল, তার চোখে কালো কাপড় বাঁধা থাকত। আইনের চোখে সকলেই সমান— মূলত এই বার্তাই দিত সেই কাপড় বাঁধা চোখ। অর্থাৎ, বিচারের সময় আদালতের কাছে ক্ষমতা, ধনদৌলত, সামাজিক মানমর্যাদা কোনও কিছুই বিবেচ্য হয় না। সকলকে সমান চোখে দেখে বিচার করা হয়। ন্যায়মূর্তির এক হাতে তরোয়াল ছিল আইনের শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতার পরিচায়ক। কিন্তু এখন শ্বেতবর্ণের এই নতুন নারীমূর্তিটিতে আর চোখ বন্ধ নেই। আর হাতে তলোয়ারের বদলে থাকছে সংবিধান। কিন্তু এই নয়া মূর্তিনিয়ে ইতিমধ্যে জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
তলোয়ার নয় থাকবে শুধু সংবিধান!
আসলে এই নয়া মূর্তির মাধ্যমে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে যে আইনের চোখ আর বাঁধা নেই, অর্থাৎ আইন এখন আর অন্ধ নয়। আইন চোখ খুলেই সকলকে সমান চোখে দেখে বিচার দেবে। এছাড়াও আগে যেখানে তলোয়ার ছিল, সেটিকে হিংসার প্রতীক হিসেবে দেখেছেন প্রধান বিচারপতি। তাই তাঁর বার্তা, আইনের চোখে হিংসা অপ্রয়োজনীয়। বরং সংবিধান অনুযায়ীই বিচার হওয়া জরুরি। তাই ন্যায়মূর্তির হাতে তলোয়ারের পরিবর্তে সংবিধান রাখা হয়েছে।
তবে ন্যায়মূর্তির ডান হাতে আগে যেমন দাঁড়িপাল্লা ছিল, সেটার কোন পরিবর্তন করা হয়নি। যেটি কিনা ভারসাম্যের প্রতীক। আসলে এই দাঁড়িপাল্লা বোঝায়, দু’পক্ষের কথায় সমান গুরুত্ব দিয়ে শুনে সঠিক বিচার করবে আদালত।