প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। বারংবার কেন্দ্র এবং সমস্ত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে একাধিক নির্দেশিকা জারি করার পরেও কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না সড়ক দুর্ঘটনা। এদিকে এও দেখা যায় যে দুর্ঘটনা ঘটার পরে রাস্তায় আহত ব্যক্তি পড়ে থাকলেও কেউ তাঁকে বাঁচানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায় না। তার পিছনে অন্যতম কারণ হল আইনি ঝঞ্ঝাট। আর এই আইনি ঝঞ্ঝাটই নাগরিক সমাজের চরম অমানবিকতা ডেকে এনেছে।
গুড সামারিটান প্রকল্প নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের!
তাই সেই সমস্যাকে দূরে সরিয়ে সাধারণ মানুষ যাতে আহতের প্রাণ বাঁচাতে উদ্যোগী হন, তা নিশ্চিত করতেই ২০২১ সালে দেশজুড়ে বেড়ে চলা পথ দুর্ঘটনায় রাশ টানতে কেন্দ্রীয় সরকার গুড সামারিটান প্রকল্প চালু করেছিল। সেই প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্ঘটনায় আহত কাউকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে গেলে উদ্ধারকারী ব্যক্তিকে ৫ হাজার টাকা ও প্রশংসাপত্র দেওয়া হত। তবে এবার আহতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাতে দেশবাসীকে আরও উৎসাহ দিতে এই পুরস্কারের অর্থ আরও বাড়ানোর ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় পরিবহনমন্ত্রী নীতীন গড়করি (Nitin Gadkari)।
আসলে দুর্ঘটনার পর প্রথম এক ঘণ্টাকে ‘গোল্ডেন আওয়ার’ বলা হয়। কারণ এই সময় মধ্যে আহতকে এই এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে গেলে আহত ব্যক্তির প্রাণে বাঁচার সম্ভাবনা অনেকখানি বেড়ে যায়। তাই এই কাজ যাতে বাকিরাও করে তার জন্য এবার কেন্দ্রীয় সরকারের পুরস্কারের অর্থ আরও বাড়িয়ে দেওয়া হল। সম্প্রতি নাগপুরে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী নীতীন গড়করি আর সেখানেই পুরস্কারের পরিমাণ ৫ থেকে এক ধাক্কায় ২০ হাজার টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ পুরস্কারের পরিমাণ মত দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার টাকা।
অর্থ পুরস্কারের পাশাপাশি দেওয়া হবে শংসাপত্র
এদিনের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় পরিবহনমন্ত্রী নীতীন গড়করি জানান যে, “আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বর্তমানে যে পুরস্কার দেওয়া হয় তা যথেষ্ট নয়। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ‘গুড সামারিটান’-এর মাধ্যমে আহতকে গুরুত্বপূর্ণ ওই এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পুরস্কারের টাকা বাড়িয়ে ৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার করা হবে।”এছাড়াও বর্তমান প্রকল্পের অধীনে, যে ব্যক্তি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে যাবে তাকে পুরস্কারের সঙ্গে একটি স্বীকৃতির শংসাপত্র দেওয়া হয়। তবে এই শংসাপত্র সকলের জন্য নয়। সড়ক পরিবহন ও হাইওয়ে মন্ত্রকের নীতিমালায় বলা হয়েছে, যারা মারাত্মক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন তারাই এই শংসাপত্র পাওয়ার যোগ্য।
আরও পড়ুনঃ ইডেনে ভারত বনাম ইংল্যান্ডের টিকিট কোথায় কবে থেকে পাবেন, দামই বা কত? জানাল CAB
প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করি ‘ক্যাশলেস ট্রিটমেন্ট’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন, যার অধীনে সরকার সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ১ সপ্তাহের চিকিৎসার জন্য ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ বহন করবে। তবে পুলিশ যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে দুর্ঘটনার তথ্য পায় তবেই সরকার আহতের চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিট অ্যান্ড রানের ঘটনায় নিহতদের পরিবারগুলির জন্য ২ লক্ষ টাকা এক্স-গ্রেশিয়ার পরিমাণও ঘোষণা করেছিলেন।