প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: যুগ এবং পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মেলাতে মেলাতে সত্যিই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে জনসাধারণ। তার উপর নিত্যদিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেন আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে পড়েছে। এদিকে কর্মসংস্থানের যোগান খুবই কম। এই অবস্থায় এবার ওষুধের দাম বৃদ্ধি নিয়ে উঠে এল এক বিস্ফোরক তথ্য।
ওষুধের দাম বাড়ানোর আবেদন NCCI এর
ওষুধের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রসের সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব। সেই প্রশ্নের লিখিত জবাবে শুক্রবার লোকসভায় রাসায়ানিক ও সার মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেল জানান, বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে এনপিপিএ-র কাছে মোট ৭৭টি ‘ফর্মুলেশন’-এর দাম বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছিল। অনেকদিন ধরে ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির তরফে লাগাতার দামবৃদ্ধির জন্য চাপ আসছিল। সেই মতোই দাম বাড়ানোয় সায় দিল NPPA। বলা হয়েছে, ওষুধ তৈরির উপাদান কেনার খরচ বৃদ্ধি, উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধি এবং মুদ্রা বিনিময়ের হার বৃদ্ধির ফলে আগের দামি ওষুধ বিক্রি করে পোষাচ্ছে না সংস্থাগুলির। তাই আটটি ওষুধের দামবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত।
কোন কোন ওষুধের দাম বাড়ল?
এই পদক্ষেপের ফলে যে ওষুধগুলির দাম বাড়ছে, সেই তালিকায় রয়েছে – বেনজিল পেনিসিলিন ১০ লাখ আইইউ ইনজেকশন (ব্যাকটিরিয়া জনিত সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত), অ্যাট্রোপাইন ইনজেকশন ০৬.এমজি/এমএল (শ্লথ হৃদস্পন্দনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত), স্ট্রেপটোমাইসিন পাওডার যা ৭৫০ এমজি এবং ১০০০ এমজি ইনজেকশন (যক্ষ্মা ও অন্য ব্যাকটিরিয়াজনিত সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত), স্যালবুটামল ট্যাবলেট ২ এমজি এবং ৪ এমজি ও রেসপিরেটর সলিউশন ৫ এমজি/এমএল (অ্যাজমা এবং অন্য শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত) , পিলোকারপাইন ২% ড্রপস (ছানি অপারেশনের পর চিকিৎসায় ব্যবহৃত), সেফাড্রক্সিল ট্যাবলেট ৫০০ এমজি (ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত), ডেসফেরিঅক্সামাইন ৫০০ এমজি (অ্যানিমিয়া ও থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত) এবং লিথিয়াম ট্যাবলেট ৩০০ এমজি (মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা ব্যবহৃত)।
প্রসঙ্গত, NPPA-র বিধি অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ওষুধের দাম এমন রাখতে হবে, যাতে সাধারণের ক্রয়সাধ্যের মধ্যে থাকে এবং বাজারে জোগানে ঘাটতিও যাতে না পড়ে। ২০১৩ সালের ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ বিধির ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদে (DPCO) এর উল্লেখও রয়েছে। NPPA তরফে, গত ৮ অক্টোবর থেকে আটটি নিত্য প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছে। ওই আটটি ওষুধ যাতে বাজারে সব সময় পাওয়া যায়, সেই বৃহত্তর স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই দাম বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে NPPA।
সরকার পক্ষের বক্তব্য হল, এই ওষুধগুলির দামবৃদ্ধির ফলে আমজনতার কোনও সমস্যা হবে না। কারণ, এই ওষুধগুলির অধিকাংশই বিনামূল্যে বিভিন্ন সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিতরণ করা হয়। তাই সরকার মনে করছে এই দাম বৃদ্ধি চাপমুক্ত রাখবে সকলকে।