প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের মধ্যে অন্যতম হল আধার কার্ড। কারণ এই কার্ডের তথ্য এখন সর্বত্র প্রয়োজন হয়। ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে রেশন, পোস্ট অফিস ইত্যাদি নানা সরকারি কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই এর গুরুত্ব অপরিসীম। আর তাই এই গুরুত্বকে কাজে লাগিয়ে এবার জালিয়াতির নতুন ছক কষছে প্রতারকরা। গ্রাহকের অজান্তেই কার্ড আপডেটের অছিলায় জেনে নেওয়া হচ্ছে গোপন তথ্য।
আধার যাচাইয়ে নেওয়া হতে চলেছে বড় উদ্যোগ
সম্প্রতি দেশে আধার-সম্পর্কিত প্রতারণার ঘটনা বেড়েই চলেছে। যেখানে প্রতারক বা স্ক্যামাররা আধার কার্ড নম্বর সংগ্রহ করার জন্য নিত্যনতুন ছক কষেই চলেছে। আসলে এই মুহুর্তে আধার ভারতের সব নাগরিকদের জন্য বরাদ্দ করা একটি সংবেদনশীল সনাক্তকরণ নম্বর। তাই এই নম্বরকে বিভিন্ন কুকর্মে কাজে লাগাতে চাইছে জালিয়াতিরা। কারণ আধারের সঙ্গে প্যান কার্ড যুক্ত থাকায় আর্থিক ক্ষতি করতে চাইছে প্রতারকরা। বাড়ছে ভুয়ো আধার কার্ডের পরিমাণ। তাই এবার সেই বিষয়ে কড়া সতর্ক বার্তা দিল আধার কর্তৃপক্ষ বা UIDAI। এবং নেওয়া হতে চলেছে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ব্যবহার করা হবে AI
সূত্রের খবর এখন থেকে গ্রাহকদের আধার যাচাইকরণ হতে চলেছে ফেস অথেন্টিকেশন বা মুখমণ্ডলের ছবির মাধ্যমেই। অর্থাৎ আগে যেমন আধার যাচাই আঙুলের ছাপ কিংবা চোখের মণি দিয়ে হত এখন থেকে এসবের পরিবর্তে আধার যাচাই হবে মুখমণ্ডলের ছবির মাধ্যমেই। তার জন্য ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন প্রক্রিয়া। ব্যবহার করা হতে চলেছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা AI কে। তবে এখনও এই বিষয়ে আলোচনা চলছে। এই সরকারী তথ্যকে আরও বেশ সুরক্ষিত এবং নিরাপদ রাখতে বিভিন্ন রাজ্যের প্রশাসনের সঙ্গে চলছে দীর্ঘ আলোচনা।
যাচাইকরণে থেকেই যাচ্ছে প্রশ্ন!
এই প্রসঙ্গে আধার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আঙুলের ছাপ ও চোখের মণি দিয়ে যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সাফল্যের হার এখনও পর্যন্ত মিলেছে ৮১ শতাংশ। কিন্তু ফেস অথেন্টিকেশন বা মুখমণ্ডলের ছবির ক্ষেত্রে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ শতাংশ। তবে এই পদ্ধতির একটি অসুবিধা রয়েছে। কম আলোর ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি সবসময় ব্যবহার করা যায় না। পাশাপাশি এর কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যাও রয়েছে। যেমন কিছু স্মার্টফোনেও যেখানে গুগল ও অন্যান্য অ্যাপ সিকিউরিটি সাপোর্ট করে না, সেখানেও ফেস অথেন্টিকেশন ব্যবহার করা যায় না। তবে এই সমস্যার সমাধান দ্রুত করা হচ্ছে। তবে সেক্ষেত্রে ফেস অথেন্টিকেশনে সাইবার হানা হতে পারে। যার অন্যতম কারণ হল ডিপফেকের ঝুঁকি। তাই এর জন্য সর্বস্তরে পরামর্শ গ্রহণ চলবে বলে জানাচ্ছেন কর্তারা।
বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা মিলিয়ে মোট ৯২টি প্রতিষ্ঠানে আধার যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ফেস অথেন্টিকেশন বা মুখমন্ডল এর ছাপ ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হচ্ছে AI কে। ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে মুখমণ্ডলের ছবি মিলিয়ে আধার যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছিল কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই দেশে এর মাধ্যমে ৫০ থেকে ১০০ কোটি লেনদেন হয়েছে বলে দাবি আধার কর্তৃপক্ষের।