বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চিনের চিন্তা বাড়িয়েছে ভারতের উচ্চশক্তিধর সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ‘ব্রহ্মোস’ (BrahMos)। চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতের কারণে ভারতের কাছে 9টি ব্রহ্মোস অ্যান্টি-শিপ উপকূলীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রত্যাশা করেছিল ফিলিপাইন। সে দেশের সরকারের সাথে চুক্তির ভিত্তিতে দেশটিকে স্থল-ভিত্তিক ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র এবং তার ব্যাটারি সরবরাহ করে ভারত।
মূলত $375 মিলিয়ন মূল্যের বিনিময়ে এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও তার সাজ-সরঞ্জাম ফিলিপাইনের কাছে হস্তান্তর করে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসেছে চিনারা। সূত্র বলছে, গত এপ্রিলে ভারতের তরফে ব্রহ্মোসের প্রথম চালান পাওয়ার পর ফিলিপাইনের দেখাদেখি এখন ইন্দোনেশিয়াও $450 মিলিয়ন মূল্যের ভিত্তিতে ভারতের সাথে ব্রহ্মোস নিয়ে প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে চাইছে। মনে করা হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার সাথে এই চুক্তি সংগঠিত হলে তা ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি হিসেবে গণ্য হবে।
চিনা আগ্রাসন চাহিদা বাড়িয়েছে ব্রহ্মোসের!
সদ্য প্রকাশিত এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিনা বাহিনীকে দাঁত ভাঙা জবাব দিতে ভারতের কাছ থেকে উচ্চ শক্তিধর ক্ষেপণাস্ত্র ব্রহ্মোস কিনে নিয়েছে ফিলিপাইন। আর এই ঘটনার পরই গোটা বিশ্বে ভারতের এই সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে। মনে করা হচ্ছে, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলিতে ব্রহ্মোসের চাহিদা সবথেকে বেশি।
আর এর নেপথ্যে রয়েছে চিনের সামরিক বাহিনীর আগ্রাসী সামরিক নীতি ও দক্ষিণ চিন সাগরে তাদের সম্প্রসারণবাদী তৎপরতা। সেই কারণেই চিনের হাত থেকে রক্ষা পেতে ভারতের অন্যতম ব্রহ্মাস্ত্র ব্রহ্মোসকে নিরাপত্তার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলি।
ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা
ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে গেলে প্রথমেই জানতে হবে এর উৎপত্তি প্রসঙ্গে। 1990-এর দশকে বিশেষ প্রয়োজনে ভারত এবং রাশিয়া যৌথভাবে এই সুপারসনিক মিসাইলটি তৈরি করে। তবে এটির ব্যবহার শুরু হয় 2001 সাল থেকে। এবার আসা যাক ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা অর্থাৎ বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে, এই ক্ষেপণাস্ত্র মূলত স্থলভিত্তিক উপকূলীয় ব্যাটারি।
যা মূলত নৌ জাহাজ এবং বিমান উৎক্ষেপণ ব্যবস্থায় একীভূত করা হয়েছে। চুক্তির ভিত্তিতে ফিলিপাইন সরকারের কাছে হস্তান্তর হওয়া উচ্চ শক্তির এই ভারতীয় মিসাইল 290 থেকে 450 কিলোমিটার পর্যন্ত সশব্দে শত্রু ঘাঁটিতে আঘাত হানতে পারে। তবে শুধুমাত্র রপ্তানি যোগ্য সংস্করণের জন্য এর পরিসীমা 290 কিমি। ভারতের এই উচ্চ শক্তিধর মিসাইলটি এক সাথে সর্বোচ্চ 300 কেজি পর্যন্ত ওজন বহন করতে সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্রহ্মোসের নির্ভুল নিশানা এবং অকল্পনীয় আক্রমণাত্মক ক্ষমতা চিন সাগরসহ চিনা বাহিনীর স্থল হুমকিকে প্রতিহত করতে সিদ্ধহস্ত।
অবশ্যই পড়ুন: গোপনে বিয়ে করছেন রিঙ্কু সিং? KKR তারকার হবু স্ত্রীর পরিচয় জানলে আকাশ থেকে পড়বেন
ব্রহ্মোসকে কাজে লাগিয়ে শক্তি বৃদ্ধি করবে ইন্দোনেশিয়া?
ইন্দোনেশিয়া ইতিমধ্যেই স্থল এবং জলসীমা উভয় ক্ষেত্রে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেছে। বর্তমানে চিনা শক্তিগুলির লাল চোখ থেকে বাঁচতে ফিলিপাইনের দেখানো পথে হাঁটতে চাইছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটি তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ভারতের ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র যোগ করে শত্রু দেশগুলির হাত থেকে রক্ষা পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুনঃ UCO Bank-এ শয়ে শয়ে শুন্যপদে নিয়োগ! মিলবে DA, DR! স্নাতক হলেই করুন আবেদন
সূত্রের খবর, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর ভারত সফরের আগেই ভারত, রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া সুবিয়ান্তোর সশস্ত্র বাহিনীকে ব্রহ্মোস ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের জন্য একটি চুক্তির মূল্য নির্ধারণে সম্মত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই ইন্দোনেশিয়ার সাথে ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি সম্পন্ন করে ব্রহ্মোস মিসাইল সরবরাহ করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার।