প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সমাজ যত এগোচ্ছে ততই যেন পুরোনো নিয়মকানুন ভেঙে আধুনিকতার ছোঁয়া পাচ্ছে। জামাকাপড় কেনাকাটা থেকে শুরু করে শাকসবজির বাজারও করতে হচ্ছে অনলাইন মারফৎ। এমনকি লেনদেন ব্যবস্থাতেও এবার দেখা যাচ্ছে আধুনিকতার ছোঁয়া। দেশ জুড়ে বাড়ছে ডিজিটাল লেনদেন। একদিকে যেমন সময়ের অপচয় কমছে ঠিক তেমনই খাটনিও বেশ কমেছে। কিন্তু ভালোর মধ্যে খারাপ তো থাকবেই। ডিজিটাল লেনদেনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হ্যাকারদের দাপট। নিস্তার পাচ্ছেন না ইউনিফায়েড পেমেন্টস্ ইন্টারফেস বা UPI-র গ্রাহকরাও।
UPI-এ হ্যাকারদের হানা বেড়েই চলেছে
প্রতিদিন খবরের শিরোনামে একের পর এক অনলাইন জালিয়াতির খবর উঠে আসে। অজানা লিঙ্কে এক ক্লিক করলেই উধাও হয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। ঘুম উড়ছে গ্রাহকদের। সাইবার অপরাধীদের হাতে পড়ে হতে হচ্ছে সর্বস্বান্ত। বিশেষজ্ঞরা এই UPI এর হ্যাকার হামলাকে বলছে ‘জাম্পড ডিপোজিট স্ক্যাম’। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে গ্রাহকদের বারংবার সতর্ক করেছে সরকার। কিন্তু এই নির্দেশের মধ্যেও ফাঁকফোকর দিয়ে ঠিক হ্যাকাররা তাঁদের নয়া পরিকল্পনা মারফৎ ফের জাল বিছিয়ে চলেছে। আর সেই ফাঁদের শিকার হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা। এই আবহে এবার স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা SBI এক নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করল।
আরও পড়ুনঃ EPFO-র ৫ নিয়ম বড় বদল! কোটি কোটি কর্মী, পেনশনভোগীদের জন্য জারি বিজ্ঞপ্তি
বর্তমানে দোকানে দোকানে কোনো সামান্য দামের কিছু কিনতে গেলেও এই UPI অ্যাপ ব্যবহার করে থাকে। যার ফলে গ্রাহকের চাহিদাকে হাতিয়ার বানিয়ে বাজারে ভুয়ো UPI অ্যাপ এর অনেক হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এগুলো দেখতে অবিকল আসল UPI অ্যাপের মতো। এর ফলে সাইবার জালিয়াতরা প্রথমে এই ভুয়ো অ্যাপে গ্রাহকের নম্বরে লেনদেন করে। তারপর সেটার স্ক্রিনশট নিয়ে গ্রাহকের মোবাইল নম্বরে ব্যাঙ্কের নামে ভুয়ো মেসেজ পাঠায়। অনেকে সেটি আসল ভেবে পুনরায় টাকা পাঠিয়ে দেয়, আর খোয়া যায় লাখ লাখ টাকা। তাই এবার সতর্ক করল SBI।
SBI-র তরফ থেকে কী বার্তা দেওয়া হচ্ছে?
ইদানিং দেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্ক SBI বা স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া প্রতিটি গ্রাহকের ফোনে টেক্সট মেসেজ পাঠাচ্ছে। আসলে এই বার্তা হল গ্রাহকদের সতর্কবার্তা। মেসেজে লেখা হয়েছে, “প্রিয় SBI গ্রাহক অপ্রত্যাশিত ডিপোজিটের পর তাৎক্ষণিকভাবে টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করলে সতর্ক থাকুন। যাচাই না করে কোনও ‘ইউপিআই’ অনুরোধ গ্রহণ করবেন না।“ এছাড়াও গ্রাহককে লোভ দেখিয়ে বা বিভ্রান্ত করে টাকা ট্রান্সফার করতে বাধ্য করা হয়। অনেক সময় এই স্ক্যামাররা গ্রাহকের ফোনে রিমোট কন্ট্রোল অ্যাপস ইনস্টল করে এবং তারপর ইউপিআই আইডি, পিন ইত্যাদি চুরি করে নেয়। এর জন্য জালিয়াতরা নানা ধরনের কৌশলও অবলম্বন করে।
আরও পড়ুনঃ সামান্য বিনিয়োগে বাড়ি বসেই হবে বাম্পার আয়, মহিলাদের জন্য রইল সেরা ব্যবসার খোঁজ
অনেক সময় গ্রাহকদের কাছে নানা লোভনীয় অফারের বার্তাও পাঠানো হয়ে থাকে। সহজ উপায়ে বাড়িতে কাজের সুযোগ এর মত নানা লোভনীয় অফারে অনেকে ডুবে যায়। আর সেই লোভেই অজানা লিংকে ক্লিক করে ঢুকে পড়ে, আর মুহূর্তের মধ্যে গায়েব হয়ে যায় টাকা। তাই এই ধরনের জালিয়াতি থেকে বাঁচতে একের পর এক বড় পদক্ষেপ করে চলেছে কেন্দ্র এবং ব্যাংকগুলি।