শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ বেশিরভাগ মানুষের মুখে এখন একটাই কথা, পৃথিবীতে যেন নেতিবাচকতা বেড়েই চলেছে। মানুষ মানুষকে এখন সম্মান করে না। প্রয়োজনে কারোর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে তারপর কাজ হাসিল হলে ফের করুচিকর ব্যবহার করছেন অনেকে। কিন্তু এখনো অবধি এই জগতে এমনও কিছু মানুষ আছেন যাদের মধ্যে কিনা মনুষত্ব এখনো অবধি বেঁচে আছে। আজ তেমনই একজন মানুষকে নিয়ে আলোচনা করা হবে যাকে কিনা অনেকে ‘মসিহা’ বলেন। নিজের তেমন আর্থিক স্বচ্ছলতা না থেকেও মানুষের আপদে বিপদে পাশে দাঁড়াতে ভোলেন না ঝাড়গ্রামের স্নেহাশিস দুর্লভ ওরফে ‘ছোটুদা’-কে নিয়ে।
ঝাড়গ্রামের ‘ছোটুদা’র গল্প
আজকের এই প্রতিবেদনে আলোচনা করা হবে ঝাড়গ্রামের স্নেহাশিস দুর্লভকে নিয়ে যিনি কিনা দিনরাত এক করে পরিশ্রম করে চলেছেন ১৫০টি বাচ্চার মুখে শুধুমাত্র হাসি ফোটাবেন বলে। এমনকি একটা সময়ে গেছে যেখানে পর্যাপ্ত টাকা না থেকে নিজের সোনার চেন বিক্রি করে শিশুদের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটাচ্ছেন। এই স্নেহাশিস দুর্লভ আবার পেশায় একজন বিউটিশিয়ান। কিন্তু তিনি সবার কাছে পরিচিত ছোটুদা নামে। দিনে দিনে তিনি মানবিকতার নজির গড়ে চলেছেন।
তাঁর একটি পার্লার আছে যেখান থেকে সামান্য কিছু টাকা উপার্জন করেন ছোটু। আর সেই টাকা দিয়ে তিনি সামাজিক কাজ করে চলেছেন মাসের পর মাস বছরের পর বছর ধরে। পেশায় তিনি একজন বিউটিশিয়ান হলেও তিনি তাঁর মানবিকতার মাধ্যমে সকলের মনে এক আলাদাই জায়গা তৈরী করে নিয়েছেন।
মানবিকতার অনন্য নজির স্নেহাশিস দুর্লভ
স্নেহাশিস দুর্লভের পথ চলাটা কিন্তু সহজ ছিল না। অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কয়েক বছর আগে বহু অসহায় শিশুর পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করেন তিনি। ঝাড়গ্রামের সিলদা গ্রামের ১৫০ জন শিশুকে একপ্রকার নিজের সন্তানের মতো লালন পালন করে চলেছেন। বিপুল খরচের জন্য ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েও শিশুদের পাশে রয়েছেন স্নেহাশিস। তাঁর উদ্যোগের ফলে এখন শয়ে শয়ে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শিশু আজ স্কুলে যাচ্ছে, শিক্ষার আলো পাচ্ছে। দু বেলা খেতে পড়তে পাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ রচনার দিদি নাম্বার ওয়ান অতীত, লাখ টাকার শো আনলেন সুদীপ্তা, কীভাবে অংশ নেবেন?
আর্থিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বহু শিশুকে যথাসাধ্য সাহায্য করে যাচ্ছেন দুর্লভ। বর্তমানে ১৫০ জন শিশুদের পাশাপাশি মহুদা গ্রামেরও বহু শিশুর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন ‘ছোটুদা’। শুধু শিশুই নয়, গ্রামের বহু মহিলাকেও তিনি লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। এক কথায় সমাজের বহু নিচুস্তরের মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে স্নেহাশিস। বর্তমান সময়ে এই স্নেহাশিস-এর এই কাজকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সকলে।