প্রীতি পোদ্দার, মানিকচক: কেন্দ্রের টাকায় দিঘা ভ্রমণ তৃণমূলের? ৪ দিনে বিনোদনমূলক মজা করার পর বিলের পরিমাণ ছাড়াল লাখের বেশি, আর সেই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই হইহই পড়ে গেল মালদার (Malda) মানিকচকে। শুধু তাই নয় নির্বাচনের আগে তৃণমূলের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় বিনোদনমূলক ট্যুরকে ঘিরে বিতর্ক দলের নেতাদের আরও একবার অস্বস্তিতে ফেলল সদস্যদের একাংশ।
ঘটনাটি কী?
রিপোর্ট অনুযায়ী মালদার মানিকচক ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত চৌকি মিদ্দাপুরের তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে এবার সরকারি টাকায় ফুর্তি করার অভিযোগ উঠে এল। জানা গিয়েছে কেন্দ্রের পাঠানো পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় দিঘায় ঘুরতে যান মালদার চৌকি মিরদাদপুর পঞ্চায়েতের সদস্যরা। খরচ করেছে ৩ লাখেরও বেশি। আর সেই বিল সামনে আসতেই চক্ষু চড়কগাছ সকলের। জোর রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরে। তবে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভুয়ো বলে অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ আনোয়ার আলি।
দিঘা ট্যুর তৃণমূল নেতাদের
তৃণমূল পরিচালিত চৌকি মিদ্দাপুরের মোট আসন ২৪টি। তৃণমূলের আসন ১৫টি। বিজেপি ৪টি ও সিপিএম-কংগ্রেস জোট ৫টি আসন পায়। এদিকে ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূল পরিচালিত। সম্প্রতি মিলেছে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা। যেই টাকা দিয়ে গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য একাধিক লক্ষ্য রাখা হয়েছে। এমনকি পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের আইনে রয়েছে, কোন পঞ্চায়েত ভাল কাজ করেছে, তা খতিয়ে দেখে, সেখানে গিয়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের একটা সুযোগ থাকে। আর এবার ওই টাকায় ফুর্তি করতে দেখা গেল শাসকদলের নেতাদের। মোট তিন লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা ব্যয় করে দিঘায় বিনোদন ট্যুর করেন তাঁরা।
বিরোধীদের অভিযোগ
মানিকচকের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিপিএম নেতা দেবজ্যোতি সিনহার অভিযোগ, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা ২১জুলাই সভায় যান। তারপর পঞ্চায়েত সদস্যরা দিঘায় গিয়ে পার্টি করেছেন। এখানে তৃণমূল নির্বাচিত ১৪ জন সদস্য রয়েছেন এবং বিজেপির বিরোধী দলনেতা রয়েছে। যদি কোনও পঞ্চায়েত ভাল কাজ করে, সেই পঞ্চায়েত দেখতে যাওয়ার জন্য যেতে পারে, অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারে। সেই টাকা পঞ্চাদশ অর্থ কমিশন থেকে খরচ করতে পারে। এটা রাজ্য সরকার নির্ধারিত করেছে। কিন্তু চৌকি মিদ্দাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ২১ জুলাই মিটিং করার পর দিঘা ঘুরতে গেলেন। সেখানে হোটেলের বিল, খাওয়ার বিল, তিন লক্ষ তিন হাজার টাকা জমা করেছে, সেটা পঞ্চায়েতে জমা পড়েছে। সেটাই জনসমক্ষে এসেছে। আর তাই নিয়ে উত্তাল পরিস্থিতি রাজনৈতিক পরিসরে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া বাড়ি বাড়ি SIR অসম্ভব! BLO-দের নিরাপত্তা নিয়ে সরব সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ
এদিকে তৃণমূল নেতাদের দিঘা ভ্রমণের অত্যাধিক টাকার বিল প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূলের জেলার সহ সভাপতি জানান যে, এটা যদি হয়ে থাকে, তাহলে ব্যবস্থা হবে। তবে সরকারি তথ্য তো তথ্য জানার অধিকার আইনের মাধ্যমেই হয়। বাইরে কীভাবে চলে আসছে বোঝা যাচ্ছে না। এসব ফেক কে ছড়াচ্ছে, এসব জেনেই মন্তব্য করা উচিত।” এছাড়াও তিনি অভিযোগ করেছেন যে সরকারি আধিকারিকদেরও একাংশ ম্যালাইন করেছেন শাসকদলকে সবটাই তদন্তে আনা হবে। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ আনোয়ার আলি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।