প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর তিনেক আগে ২০২২ সালে জিটিএর অধীন একাধিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে। সেখানকার মুখ্য কার্যনিবাহী আধিকারিক অনীত থাপা এবং বিনয় তামাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বেআইনিভাবে নিয়োগের। জানা গিয়েছিল টাকার বিনিময়ে অন্তত ৫০০ শিক্ষক নিয়োগ করেছিলেন। আর তারই প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল ‘গোর্খা আনএমপ্লয়েড প্রাইমারি ট্রেইনড টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ এবং মামলা করা হয় হাইকোর্টে। এই মুহূর্তে সেই মামলা বিচারাধীন।
রাজ্য সরকারের প্রতি চরম ক্ষুব্ধ বিচারপতি!
গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে জিটিএ নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। আর সেই মামলার শুনানিতে এবার বিচারপতি ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছে রাজ্যের বিরুদ্ধে। এদিন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু রাজ্যের জানতে চান যে, FIR-এ প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ত্রিণাঙ্কুর, বিনয় তামাং, প্রান্তিক-সহ সাত জনের নাম রয়েছে। কিন্তু তাঁদের নাম থাকলেও তাদের কেন একবারও এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হল না? যা নিয়ে শুরু হয়ে যায় শোরগোল। আর এর ভিত্তিতেই বিচারপতির তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করে বলেন যে খুবই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি।
আরও পড়ুনঃ ‘স্বাধীনতার পর থেকেই বঞ্চিত, DA একেবারে শূন্য হয়ে গিয়েছে!’ জানা গেল মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির উপায়
এমনকি সমতলের মতো পাহাড়েও শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বড়সড় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সেই কারণে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসেই শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিধাননগর উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক। কিন্তু তার ভিত্তিতে FIR দায়ের করেনি পুলিশ। যা নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্টের বিচারপতি। এরপর গত বুধবারই কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলায় CBI তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু শীর্ষ আদালত এই তদন্তে রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা রাখল।
আরও পড়ুনঃ মাধ্যমিক পাশে RPF-এ চাকরি, ৪২০৮ শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করল রেল
CID র তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ বিচারপতি
এদিকে রাজ্যের আইনজীবীকে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন, “সময় এসেছে, এবার পদক্ষেপ নিতে হবে। আদালত পুস না করলে কিছুই হবে না। মামলার পিটিশন বাতিল করার আবেদন করুন তদন্তের প্রয়োজন হবে না। এটা সহজ কাজ।” পাশাপাশি বিচারপতি তদন্তকারীদের আইনজীবীকেও তীব্র ভর্ৎসনা করেন। বলেন, “যা রিপোর্ট দিয়েছেন তাতে শুধু ‘ঘটনার বর্ণনা’! তদন্তের কোন অংশে অগ্রগতি কোথায় হচ্ছে সেই বিষয়ে কোনো তথ্যই প্রকাশ কেন করা হয়নি?” আদলে জিটিএ নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় রাজ্যের তরফ থেকে CID এর উপর তদন্তভার দেওয়া হয়েছিল।