প্রীতি পোদ্দার: ইতিমধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা SSC র তরফে ১৪,৩৩৯ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।যাতে দ্রুত স্কুল বাছাই করতে পারে চাকরিপ্রার্থীরা। এদিকে গত ২৮ আগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল, এক মাসের মধ্যে উচ্চ প্রাথমিকের ১৪ হাজার ৫২ জন চাকরিপ্রার্থী মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। পরবর্তী এক মাসের মধ্যে নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এবার সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার প্রথমেই চরম হতাশায় মুখ পুড়লো SSC- র।
দীর্ঘ ৮ বছরের অপেক্ষার অবসানের পর গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, থেকে শুরু হল উচ্চ প্রাথমিকের প্রথম কাউন্সেলিং। পুজোর আগে আপাতত ৩ এবং ৪ অক্টোবর, দু’দিন কাউন্সেলিং হবে উচ্চ প্রাথমিকের। পুজোর পরে আরও তিন দফা কাউন্সেলিং করা হবে বলে জানিয়েছে SSC। নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠিন রেখে এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে আচার্য সদনে এই কাউন্সেলিংয়ের আয়োজন করা হয়। আর সেই কাউন্সেলিংয়ে পার্শ্বশিক্ষকদের জন্য ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রয়েছে বলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে।
অনুপস্থিত প্রায় ২৮% প্রার্থী!
জানা গিয়েছে প্রথম দিনে কাউন্সিলিংয়ে স্কুল বাছাইয়ের জন্য ডাকা হয়েছিল ১৪৪ জনকে। তার মধ্যে অনুপস্থিতি ও স্কুল পছন্দ না হওয়ার কারণে শংসাপত্র গ্রহণ করেনি ৪১ জন। বাকি মোট ১০২ জনের হাতে শংসাপত্র তুলে দিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন SSC। এদিকে যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কত বিক্ষোভ ও আন্দোলন হয়েছে গত কয়েক বছরে। এবার সেই বহু প্রতীক্ষিত কাউন্সেলিংয়েই গরহাজির থাকলেন প্রায় ২৮% প্রার্থী।
কেন এই গরহাজির?
আসলে গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে ধীর স্রোত বয়ে চলেছে তা অনেকটাই চোখে পড়ার মত ছিল। তার প্রেক্ষিতে এ কথা বলা যায়, ১৯৯৭ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশন তৈরি হওয়ার পরে ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রায় প্রতি বছর নিয়ম করে হাজার হাজার যোগ্য প্রার্থীর বেছে নেওয়া স্কুল সার্ভিস কমিশন তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। যার ফলে অনেক শিক্ষক আজ সরকারি চাকরির আশা ছেড়ে দিয়েছে এবং নানা ধরনের কাজে নিজেদের নিয়োগ করেছে। কেউ হয়তো আবার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা শুরু করেছে।
অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতির বক্তব্য, শিক্ষকতা যে মহান ব্রত, সেটি দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে নিয়োগ এর ফলে ইদানীং কালে সেই পেশায় কলঙ্কের দাগ লেগেছে। ফলে এ হেন চাকরি আদৌ কতটা পরিচ্ছন্ন, সেটাই প্রার্থীদের মনে সংশয় বাড়িয়েছে।
তবে হতাশার মাঝেই অনেক প্রার্থী আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। গতকাল SSC ভবনে আসা চাকরিপ্রার্থীদের কথায় শোনা যায় যে তাঁদের জীবন থেকে আগেই ১০ বছর চলে গিয়েছে। একাধিকবার কাউন্সেলিংয়ে ডেকেও লাভ হয়নি কোনো। তবে এবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে কাউন্সেলিং করা শুরু হয়েছে। তাই মনে হয় এবার চাকরি মিলবে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আগেই জানান, পুজোর আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। সেই মত শুরু হয়েছে প্রক্রিয়া। জানা গিয়েছে আগামী ২৪,২৮ ও ২৯ অক্টোবর পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।