প্রীতি পোদ্দার, জলপাইগুড়ি: জেলে বন্দিদের রহস্য মৃত্যু সংক্রান্ত একাধিক খবর শিরোনামে উঠে আসে বারংবার। এমনকি তদন্ত করতে করতে পুলিশ বন্দীদের ওপর এমনই অসহনীয় অত্যাচার করে যে অনেকেই মারা যান। বাদ যান না জেল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি বেআইনি মদ বিক্রির অভিযোগে এক আসামিকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে বিষ্ণুপুর থানা এবং বারুইপুর জেল কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে জোরকদমে চলছে মামলা। আর এর মধ্যেই ফের খবরের শিরোনামে উঠে এল জেলে বন্দি মৃত্যুর খবর।
ঘটনাটি কী?
২০২২ সালে পকসো মামলায় জেলে বন্দি ছিলেন এক যুবক। শাস্তি স্বরূপ নিম্ন আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ছিলেন তিনি। এদিকে জেলে থাকতেই তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। এদিকে সেই মৃত্যুর খবর কোনো ভাবেই জানতে পারেনি না মৃতের পরিবার। এমনকি জেল হেফাজতে থাকাকালীন ওই যুবকের অসুস্থতা, কখন তাঁর মৃত্যু হল, তার কোনোটাই পরিবারকে জানায়নি জেল কর্তৃপক্ষ। এদিকে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ওই বন্দির শরীরে হিলিয়ামের উপস্থিতি ছিল। যা নিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) উঠল মামলা।
মামলা উঠল হাইকোর্টে!
সম্প্রতি ওই যুবকের বাড়ির লোক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে আবেদন জানান। কিন্তু তাঁদের সেই আবেদন খারিজ করে দেয় জেল কর্তৃপক্ষ। এবং জানানো হয়, তাঁদের ছেলে হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি। এই খবর জানতে পারে তড়িঘড়ি তাঁর বাবা-মা ছোটেন হাসপাতালে। কিন্তু অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় যে ততক্ষণে ছেলে মারা গিয়েছে। ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। তার সঙ্গে পরিবারের ক্ষোভের মুখে পরে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের জেল কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনার পরই আদালতের দ্বারস্থ হয় মৃতের পরিবার। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়। গোটা ঘটনা ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। এদিন মৃতের পরিবারের তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী ড. অর্জুন চৌধুরী ও রাজ্য সরকার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হীরক বর্মণ। উভয়পক্ষের কথা শুনে বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, “ছেলেটি মরে গিয়েছে বাবা… এত সহজে ছাড়ব না। বন্দি হিসেবে রাখলে প্রশাসনকে তো দায়িত্ব নিতেই হবে।” আর তাই ওই বন্দির শরীরে কীভাবে হিলিয়াম এল? জেলখানায় কী খেয়েছিলেন ওই যুবক? বিষক্রিয়াই বা হল কী করে? এই সব প্রশ্নের উত্তর চেয়ে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করেন বিচারপতি ঘোষ।
কর্মীদের তুলনায় ৫৩৪ গুণ বেশি, কত বেতন পান ৯০ ঘণ্টা কাজের নিদান দেওয়া L&T-র চেয়ারম্যান?