ভাঙা হল অজয় নদের উপর তৈরি বাংলা-ঝাড়খণ্ড সংযোগকারী সেতু, বিপাকে কয়েক হাজার মানুষ

Published on:

ajay river bridge

প্রীতি পোদ্দার, আসানসোল: বছরের পর বছর ধরে ঝাড়খণ্ডের প্রান্তিক অঞ্চলের বহু গ্রামের ভরসাযোগ্য স্থান হয়ে উঠেছে এপারের পশ্চিম বর্ধমান জেলা। সেক্ষেত্রে জীবিকা হোক বা পড়াশোনা, এমনকি চিকিৎসা থেকে শুরু করে নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য ভরসা করতে হয় আসানসোলের উপর। তাই সেখানকার অর্থাৎ ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিম বর্ধমানের সংযোগকারী স্থায়ী সেতুর দূরত্ব দূর করতে অজয় নদীর ওপর বহু বছর আগে একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু এবার বহু বছর ধরে চলা এই সেতু ভেঙে দিতে চলেছে প্রশাসন।

ঘটনাটি কী?

WhatsApp Community Join Now

আসানসোলের বারাবনি ব্লকের আমুলিয়া এলাকায় প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি গ্রামে কোনও বাংলা মাধ্যম স্কুল নেই। এমনকি সেই এলাকায় নেই কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এলাকার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে তখন বীরভূমের সিউড়িতে যেতে হয়, যা এলাকা থেকে অনেকটাই দূরে। যার ফলে গ্রামবাসীদের সুবিধার্থে অজয় নদের উপরে ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে সংযোগকারী একটি অবৈধ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। নদীর বুকে পাইপ দিয়ে জল পারাপারের রাস্তা তৈরি করে দিয়ে সেই পাইপের উপরে বোল্ডার এবং মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল পথ। আর সেই ওবৈধ সেতুর মাধ্যমে অনেকটাই সুবিধা হয়েছিল। কিন্তু সেই সুবিধাতেও এবার পড়ল বড় ছেদ। অবৈধ সেতু এবার ভেঙে দিল জেলা প্রশাসন।

কী বলছেন জেলা প্রশাসন?

সূত্রের খবর অবৈধ সেতু ভেঙে ফেলার প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের স্পষ্ট দাবি, নদীর গতিপথ এইভাবে আটকে কখনই কোনও কিছু নির্মাণ করা যায় না। এই কাজ বেআইনি। তাই গ্রামবাসীদের কোনো সম্মতি না নিয়েই সেতু ভেঙে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে বারাবনির ব্লক আধিকারিক শিলাদিত্য ভট্টাচার্য জানান, “নদীর গতিপথ এভাবে আটকানো যায় না । তাই খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বুলডোজার দিয়ে ওই পাথর এবং মাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে নদীর বুক থেকে।” প্রশাসনের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ সেখানকার বাসিন্দারা।

বারাবনি ব্লকের আমুলিয়া এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, “আমাদের এই গ্রামগুলিতে শিক্ষার কোনও ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনের তরফেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি এখানকার রাস্তাঘাট নিয়ে কোনরকম ব্যবস্থা করা হয়নি। এলাকা জুড়ে বছরের পর বছর ধরে মাটির পথ রয়ে গিয়েছে। এছাড়াও সবচেয়ে বড় অসুবিধার কারণ হল রোগীকে নিয়ে আসা। নদীর উপর এই অবৈধ সেতুর মাধ্যমে মাত্র চার কিলোমিটারের মধ্যে সহজেই অ্যাম্বুলেন্সে রোগীকে এপারে হাসপাতালে নিয়ে আসা যেত চিকিৎসার জন্য। এখন সেটা অনেক ঘুরপথে আসতে হবে।”

সঙ্গে থাকুন ➥
X