প্রীতি পোদ্দার: একেতেই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ টাকা ঠিকভাবে না পাঠানোয় কেন্দ্র এবং রাজ্যের দ্বন্দ্ব উচ্চ শিখরে। তার উপর আবার কিছু দিন আগে DVC-র ছাড়া জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় রীতিমত কেন্দ্রকে তুলোধনা করে ছাড়ে রাজ্য সরকার। একেবারে ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়। তার উপর দুই বছর ধরে কেন্দ্র সরকার আবাস যোজনার জন্য পশ্চিমবঙ্গের প্রাপ্য ৮২০০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ। যদিও এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিল কেন্দ্র থেকে যদি টাকা না আসে, তবে রাজ্য সরকার নিজেদের তহবিল থেকে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। আর এবার সেই পথেই পা বাড়াল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। যদিও, এই মাসে শহুরে আবাস যোজনায় বাংলার জন্য ১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র সরকার।
অভিযোগ একাধিকবার কেন্দ্রকে রাজ্য সরকার আবাস যোজনার টাকা বরাদ্দ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার নাকি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তাই রাজ্য সরকার আর কেন্দ্রীয় সরকার এর ওপর ভরসা না করে গত বুধবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরের সচিবদের সঙ্গে আবাস যোজনা প্রকল্প নিয়ে বৈঠক করে। এবং কেন্দ্রকে বাদ দিয়ে এই প্রকল্পের নাম ‘বাংলার আবাস যোজনা’ রাখা হবে বলেও জানানো হয় সেই বৈঠকে।
Bangla Awas Yojana প্রকল্পে পুনরায় আবেদনকারীদের নাম যাচাই!
এছাড়াও এদিনের বৈঠকে জানানো হয় যে আবাস যোজনার টাকা দেওয়ার জন্য পুনরায় আবেদনকারীদের নাম যাচাই করতে হবে। রাজ্যের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর অর্থাৎ SOP মেনেই যাচাইয়ের কাজ করতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে। এবং সেই SOP রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পেশ করা হবে। তার পর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কবে থেকে আবেদনকারীরা পাবে Bangla Awas Yojana-র টাকা?
গাইডলাইন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, আগামী ২১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করতে হবে। এবং ক্রস চেকিংয়ের কাজ শেষ করতে হবে ১৪ নভেম্বরের মধ্যে। আর সেই সমস্ত তথ্য বিডিও, এসডিও, জেলাশাসকের অফিসের সামনে এবং ওয়েবসাইটে তালিকায় দেখানো হবে আগামী ২১ থেকে ২৭ নভেম্বরের মধ্যে। যদি এই সংক্রান্ত তথ্যের উপর কারও কোনো রকম অভিযোগ থাকে তাহলে এইমুহুর্তে সে সেখানে জানাতে পারবেন। এরপর ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলাস্তরের কমিটি সেই তালিকার অনুমোদন দেবে। এবং ২০ ডিসেম্বর থেকে সমস্ত আবেদনকারীকে টাকা দেওয়া শুরু হবে বলে জানা যাচ্ছে।
তবে, একসঙ্গে এই পরিমাণ টাকা মিলবে না। তিন কিস্তিতে মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেবে রাজ্য। প্রত্যন্ত এলাকার পরিবারের জন্য ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে ১১ লক্ষ মানুষের অ্যাকাউন্টে আবাসের প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। এর পরের কিস্তিতে ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। আর শেষ কিস্তিতে দেওয়া হবে বাকি ২০ হাজার টাকা।
কারা কারা পাবেন না Bangla Awas Yojana-র টাকা?
- যে সকল ব্যক্তির আড়াই একর বা তার বেশি সেচযুক্ত কৃষি জমি আছে এবং যাদের ৫ একর অসেচযুক্ত কৃষি জমি রয়েছে তাঁরা এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন না।
- যাঁদের জমি ছাড়াও তিন-চার চাকার গাড়ি, তিন-চার চাকার কৃষিজ যন্ত্র রয়েছে তাঁরাও এই আবাসনের টাকা পাবেন না।
- এছাড়াও কোনো ব্যক্তির মাসিক আয় যদি ১৫ হাজারের বেশি হয় এবং কেউ যদি ইনকাম ট্যাক্স দিয়ে থাকেন তাহলে সেই পরিবারগুলি এই প্রকল্পের আওতায় পড়বে না।