প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কেন্দ্রের পাঠানো অর্থের ভরসায় না থেকে এবার একাই বাংলায় গ্রাহকদের সরকারি বাড়ি বানানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই জেলায় জেলায় আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শুরু হয়েছে ১২ লক্ষ গ্রাহকের বাড়ি তৈরির প্রথম ধাপ। সব মিলিয়ে প্রথম দফায় গোটা রাজ্যের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৭২০০ কোটি টাকা।
শুরু থেকেই কড়া নজরে বাংলার আবাস প্রকল্প
জানা গিয়েছে দ্বিতীয় কিস্তিতেও প্রত্যেক উপভোক্তাকে ৬০ হাজার করে টাকা পাঠাবে সরকার। তাতে প্রায় ৭২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা যাচ্ছে সেই বরাদ্দ দেওয়া হবে অন্তত মাস চারেক বাদে। যখন প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে বাড়ি তৈরির কাজ বেশ কিছুটা এগিয়ে যাবে, তখন সমস্ত কাজ খতিয়ে দেখার পরেই মিলবে দ্বিতীয় বরাদ্দ। এদিকে এই সরকারি প্রকল্পে জালিয়াতি ঠেকাতে শুরু থেকেই নানা রকম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে রাজ্য সরকার। আসলে এর আগে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে একের পর এক অর্থ বেহাত হওয়ার ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছে। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়ে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তাই সেই সব থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে প্রশাসন।
প্রকল্পের অর্থ ফেরত নিতে খোলা হবে পৃথক অ্যাকাউন্ট
আবাসে আর্থিক দুর্নীতি ঠেকাতে নানা রকম সতর্ক থাকার বার্তা দিয়ে চলেছে নবান্ন। এ নিয়ে দফায় দফায় মৌখিক নির্দেশও দেওয়া হয়েছে জেলা-কর্তাদের। সঠিক হাতে বরাদ্দ যাচ্ছে কি না, টাকা ছাড়ার আগে-পরে খেয়াল রাখা হচ্ছে। এমনকি আবাস প্রকল্পে কোনও বরাদ্দ ‘ভুল’ উপভোক্তার হাতে চলে গেলে, তা ফেরানোর মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হল নবান্নের তরফ থেকে। জানানো হয়েছে আবাস প্রকল্পে ফিরিয়ে নেওয়া অর্থের জন্য পৃথক অ্যাকাউন্ট অর্থাৎ ডিডাক্ট রিকভারিজ হেড অব অ্যাকাউন্ট খোলার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। এবং বিষয়টা যে বাধ্যতামূলক সেটাও স্পষ্ট করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে পাঠিয়েছে নবান্নের তরফ থেকে।
আরও পড়ুনঃ DA নয়, ৫ লক্ষ টাকা পাবেন সরকারি কর্মীরা
কেন নেওয়া হল এই উদ্যোগ?
জানা গিয়েছে রাজ্য সরকারের এই নিয়ম কার্যকরের ফলে অনায়াসে সরকারি পদ্ধতি মেনে ‘হাউজিং’, ‘রুরাল হাউজিং’, ‘বাংলার বাড়ি (গ্রামীণ)’, ‘ডিডাক্ট রিকভারি’, ‘অন্যান্য’ ইত্যাদি তহবিলে অযোগ্যদের থেকে টাকা ফিরিয়ে নিতে পারবেন জেলা-কর্তারা। আর এর থেকেই বোঝা যাবে, কোন ক্ষেত্রে কত জন অন্যায্য উপভোক্তার কাছে অর্থ পৌঁছেছিল। মোট কত টাকা অন্যায্য উপভোক্তার কাছে গেছে । আর মাধ্যমে ভবিষ্যতে এই প্রকল্পের যাচাই পদ্ধতি আরও কঠোর এবং নির্ভুল হবে।
আরও পড়ুনঃ জোর বিতর্ক! তৃণমূলে এবার অভিষেক বনাম কুণাল
আসলে আবাস যোজনার প্রথম এবং দ্বিতীয় এই দু’টি কিস্তিতে সরকারকে পুরোপুরি নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ১৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। শুধু এই প্রকল্প নয়, রাজ্যের আরও নানা সরকারী প্রকল্পগুলি মিলিয়ে বিপুল অর্থ খরচ করতে হচ্ছে রাজ্যকে। সব মিলিয়ে চলতি বছর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আর্থিক ভাণ্ডারের চাপ গতবারের তুলনায় কিছুটা হলেও বেশি। তাই অতি প্রয়োজন ছাড়া অন্যান্য খরচ করতে চাইছে না রাজ্যের অর্থ দফতর। সেই কারণে এই বড় পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |