প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে রাজ্যে বেকারত্বের সমস্যা এক অন্যতম জ্বলন্ত সমস্যা। সরকারী চাকরীর জন্য প্রস্তুতি নিলেও বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে সেখানেও নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই ব্যবসার দিকেই মন দিচ্ছে বাকিরা। তাই রাজ্যের যুবক-যুবতীদের ব্যবসা করার সুযোগ করে দিতে ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এর মাধ্যমে ব্যবসার জন্য সহজ শর্তে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। তাতেও যদি এবার ব্যবসায় কোনো বাঁধা বিপত্তি আসে তা সহজেই নির্মূল করতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। নিয়ে আসা হল ‘শিল্পের সমাধান’ প্রকল্প।
বড় উদ্যোগ রাজ্য সরকারের
জানা গিয়েছে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের সমস্যা সমাধান ও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা সম্পর্কে সচেতন করতে প্রতিটি ব্লকেই ‘শিল্পের সমাধান’ শিবির খুলতে চলেছে রাজ্য সরকার। আর এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্যই হল নিবিড় কর্মসংস্থানে ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের উৎসাহিত করা। এটি শুধু গ্রামীণ এলাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে তা কিন্তু নয়। এর পাশাপাশি পুর এলাকাগুলিতেও এই শিবির খোলা হবে। আগামী মাসের ২ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে যে কোনও ছ’দিন এই শিবির বসবে।
সেখানেই ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে যুক্ত রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আবেদন করা যাবে। একই সঙ্গে এই সমস্ত প্রকল্প সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যার সমাধানও করা হবে। এই প্রকল্পের জন্য একটি বড় অনুষ্ঠানের আয়োজনও করতে পারে রাজ্য সরকার। সেই অনুষ্ঠানে স্বয়ং উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এই কর্মসূচি নিয়ে একটি বৈঠক করেছেন। আর সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ক্ষুদ্রশিল্প দফতরের সচিব রাজেশ পাণ্ডে এবং সংশ্লিষ্ট অন্য দফতরের সচিবেরা।
কী বলছেন রাজেশ পান্ডে?
এই প্রকল্প প্রসঙ্গে রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দপ্তরের সচিব রাজেশ পান্ডে জেলাশাসকদের জানিয়েছেন, শিবিরগুলি সফল করতে প্রচার চালাতে হবে। দেখতে হবে যাতে সব ধরনের ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগী এবং বেকার ছেলেমেয়েরা সেখানে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও তাঁতি ও শিল্পীরা যদি মারা যান, তাহলে তাঁদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করা হবে। পাশাপাশি খাদি ও হ্যান্ডলুম শিল্পীদেরও বিভিন্ন আর্থিক সহায়তা প্রকল্প রয়েছে।
বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের আগেই বড় সিদ্ধান্ত
অনেক সময় দেখা যায় ব্যাঙ্ক এর ঋণ থেকে বিভিন্ন সরকারি ছাড়পত্র নিয়েও তাঁদের প্রতিদিনই হয়রানির শিকার হতে হয়। তাই ঠিক হয়েছে এই শিবিরগুলিতে কৃষি, শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট, পঞ্চায়েত, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, অনগ্রসর কল্যাণ, উচ্চশিক্ষা, কৃষি, এমএসএমই, ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। যাতে ওই শিবিরেই অভিযোগকারী ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের সমস্যার সমাধান এর সূত্র সহজেই পাওয়া যায়। সম্পূর্ণ কাজ ডিসেম্বরেই সম্পন্ন করতে চায় প্রশাসন, কারণ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে হবে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন। তার আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ছোট, মাঝারি এবং ক্ষুদ্র শিল্পে আগ্রহীদের উৎসাহ দিতে চান তিনি।