প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডের পরে ওই হাসপাতালে একের পর এক দুর্নীতির খবর উঠে এসেছে খবরের শিরোনামে। প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে নিহত তরুণী চিকিৎসকের প্রমাণ লোপাট এবং দুর্নীতির নানা অভিযোগ। ইতিমধ্যেই দু’টি মামলাতেই CBI এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। আর গ্রেফতারির পরেই তাঁর লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। এমনকি রাজ্যের বৈধ চিকিৎসকদের তালিকা থেকেও নাম ছাঁটাই হয়েছে তাঁর। আর তার জেরে কাউন্সিলের এর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে গত ১৪ অক্টোবর হাইকোর্টে বিচারপতি পার্থসারথি সেনের এজলাসে মামলা করেন সন্দীপ। কিন্তু জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন খারিজ করে কোর্ট। আর সেই মামলা নিয়ে এবার মন্তব্য করলেন বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল।
ডাক্তারি লাইসেন্স নিয়ে মামলা হাইকোর্টে
জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে সন্দীপ ঘোষের মামলাটি ওঠে বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল এর বেঞ্চে। এ দিন সন্দীপের আইনজীবী জানান, ডাক্তারি লাইসেন্স বাতিল হওয়ার পর সন্দীপ নিজের বক্তব্য পেশ করার সুযোগ পাননি। এদিকে জেলে বন্দি থাকায় কাউন্সিলের কারণ দর্শানোর নোটিসেরও জবাব দিতে পারেননি। আর তাই সন্দীপের বক্তব্য না শুনেই তাঁর লাইসেন্স এবং রাজ্যের চিকিৎসক তালিকা থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কাউন্সিল।
সন্দীপের বক্তব্যের উপর পুনর্বিবেচনা!
আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিচারপতি নির্দেশ দেন যে ডাক্তারির লাইসেন্স বাতিলের আগে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বক্তব্য শুনতে হবে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলকে। কিন্তু যেহেতু সন্দীপ বর্তমানে জেলবন্দি তাই মেডিক্যাল কাউন্সিল তাঁকে যে নোটিস ধরিয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে সন্দীপের তরফে তাঁর স্ত্রী উত্তর সেই নোটিশের জবাব দেবেন। এবং আদালতের নির্দেশ, সন্দীপের স্ত্রীকে বক্তব্য পেশের পর্যাপ্ত সুযোগ দিতে হবে। আর সেই বক্তব্যের ওপর নির্ভর করেই আগামী ২২ নভেম্বরের মধ্যে সন্দীপের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে কাউন্সিলকে।
এর আগে, আরজি কর দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টে CBI তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন সন্দীপ। অভিযোগ ছিল, তাঁর বক্তব্য না শুনেই আরজি কর দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। অকারণে আরজি করে মহিলা চিকিত্সককে খুন ও ধর্ষণের সঙ্গে দুর্নীতি মামলাটি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি হাইকোর্ট যে মন্তব্য করেছে, সেই মন্তব্যটি প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু মামলাটি অবশ্য খারিজ হয়ে যায়।