প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: একটা সময় ছিল যখন সমাজে মহিলাদের একদম নিচু চোখে দেখা হত। রীতিমত খেলার পুতুল হিসেবে মানা হত। তাঁদের কাছে তখন জগৎ বলতে ছিল রান্নাঘর। পড়াশোনা, স্কুল এবং কলেজ তখন ভাবনা চিন্তার বাইরে ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই চিত্র সম্পূর্ণটাই বদলে গিয়েছে। এখন মহিলাদের কর্মক্ষেত্র আরও বিরাট আকার ধারণ করেছে। দেশ থেকে শুরু করে রাজ্য চালাচ্ছেন মহিলারা। আর এই আবহেই সম্প্রতি জানা গিয়েছে, সামগ্রিক ভাবে আয়কর দেওয়ার ক্ষেত্রে এবার প্রথম তিনে জায়গা দখল করল পশ্চিমবঙ্গ।
এগিয়ে বাংলা!
সম্প্রতি স্টেট ব্যাঙ্কের (State Bank of India) সমীক্ষায় উঠে এসেছে সেই চমকপ্রদক তথ্য। রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে যে, গত অর্থবর্ষে ভারতে মহিলা করদাতার অংশীদারিত্বের বিচারে প্রথম সারিতে ছিল কেরল, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব ও অন্ধ্রপ্রদেশ। আর এই তালিকার বিচারে কেরলে মোট আয়করদাতার মধ্যে মহিলা আয়করদাতার পরিসংখ্যান ছিল ২২%-২৬%। তামিলনাড়ুতে সেই সংখ্যাটা ছিল ২১%-২৫%। পশ্চিমবঙ্গ এবং পাঞ্জাবে ছিল যথাক্রমে ১৬%-১৯% এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ছিল ১৫%-১৯%।
শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে মহিলারা
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল বাংলার মোট জনসংখ্যার নিরিখে প্রায় ১০ লক্ষ মহিলা আয়কর দিয়ে থাকেন। তবে সেক্ষেত্রে শুধু আয়কর দেওয়ার ক্ষেত্রেই এগিয়ে নেই , বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রেও পুরুষদের থেকে অনেক এগিয়ে বাংলায় নারীরা। শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে মহিলারা। তাহলে সেক্ষেত্রে বলা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে মহিলারা আরও স্বনির্ভর হয়ে উঠেছেন। তবে মহিলাদের অংশীদারিত্বে বাংলা তৃতীয় স্থানে থাকলেও সামগ্রিক তালিকায় প্রথম সারিতে নেই। এই তালিকার প্রথম পাঁচটি রাজ্য হল মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, রাজস্থান ও তামিলনাড়ু।
স্টেট ব্যাঙ্কের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সৌম্যকান্তি ঘোষ জানান, “মহিলা আয়করদাতার অংশীদারিত্বের প্রশ্নে বাংলা-সহ বাকি রাজ্যগুলির অগ্রগতি প্রশংসনীয়। এতে প্রমাণ হচ্ছে এই রাজ্যগুলিতে মহিলাদের আর্থিক অবস্থা বেশ মজবুত।” অন্যদিকে আরেক আর্থিক উপদেষ্টা নীলাঞ্জন দে জানান, “এই তথ্য তুলে ধরে রাজ্যের মহিলারা আর্থিক ভাবে স্বাধীন হচ্ছেন। সেই কারণে তাঁদের হাতে অর্থ রয়েছে। শুধু আয়কর দেওয়া নয়, স্বনির্ভর হওয়া এবং লগ্নির ক্ষেত্রেও পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে।”