প্রীতি পোদ্দার: দেখতে দেখতে পুজো একেবারে দোরগোড়ায়। আর মাত্র কয়েক দিন এর অপেক্ষা। আর তার পরেই মর্ত্যে সপরিবারে মা দুর্গার আগমন হবে। চলতি বছর গত ১৭ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ বিশ্বকর্মা পুজোর দিন থেকে পিতৃপক্ষ এর সূচনা হয়েছিল। এই পিতৃপক্ষ এক পক্ষকাল, অর্থাৎ ১৫ দিন চলার পর আগামী ২ অক্টোবর দেবীপক্ষের সূচনা হবে। হিন্দুধর্ম অনুসারে বলা হয়ে থাকে পিতৃপক্ষ পূর্বপূরুষের তর্পণের জন্য প্রশস্ত এক বিশেষ সময়। তাইতো পিতৃপক্ষের শেষ দিনটিকে মহালয়া হিসেবে পালিত হয়।
তবে হিন্দু ধর্মের প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী যেহেতু পিতৃপক্ষে শ্রাদ্ধকর্ম, তর্পণ ইত্যাদি মৃত্যু-সংক্রান্ত আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়, তাই এই পক্ষ শুভকাজের জন্য একদমই উপযুক্ত নয়। উত্তর ভারত ও নেপালে ভাদ্রের পরিবর্তে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষকে পিতৃপক্ষ বলা হয়। কিন্তু জানেন কি মহালয়ার দিন এই তর্পণ কেন করা হয়? আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে সম্পূর্ণটা জেনে নিন বিস্তারিত।
কী এবং কেন করা হয় তর্পণ?
আসলে পূর্বপুরুষ, ঋষি, পিতামাতা এবং গুরুর উদ্দেশে খাবার ও জল নিবেদন করে তাঁদের তুষ্ট করাই হল তর্পণ। আর পিতৃপুরুষ তুষ্ট হলে, তাঁদের আশীর্বাদে জীবন্ত দশায় দীর্ঘায়ু, ধনসম্পত্তি, জ্ঞান, শান্তি এবং মৃত্যুর পর স্বর্গ ও মোক্ষ লাভ হয়। তবে কেউ যদি মহালয়ার দিন তর্পণ করতে যেতে না পারেন সেক্ষেত্রে পিতৃপক্ষের মৃত্যুর তিথিতেও এই কাজ করা যায়। যদি পিতৃপক্ষের নির্দিষ্ট তিথিতে সম্ভব না হলে, তাহলে পিতৃপক্ষের শেষ দিন অর্থাৎ অমাবস্যায় এই কাজ করা শুভ বলে মনে করা হয়।
অমাবস্যা আরম্ভ এবং শেষের সময়কাল
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, আগামী ২ অক্টোবর, বুধবার পিতৃপক্ষের শেষ দিন এবং দেবীপক্ষের সূচনা। আর অমাবস্যা তিথি আরম্ভ হচ্ছে ১ অক্টোবর, ১৫ আশ্বিন, মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪১ মিনিট। এবং অমাবস্যা তিথি শেষ হবে ২ অক্টোবর, ১৬ আশ্বিন বুধবার রাত ১২টা ১৯ মিনিট। তবে গুপ্তপ্রেশ পঞ্জিকা মতে অমাবস্যা তিথি আরম্ভ হবে ১ অক্টোবর, ১৪ আশ্বিন, মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪ মিনিট ৫০ সেকেন্ড। এবং অমাবস্যা তিথি শেষ হবে ২ অক্টোবর, ১৫ আশ্বিন, বুধবার। সময়– রাত ১১টা ৫ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড।